৩৮ হাজারেরও বেশি প্রবাসীর লাশ দেশে এসেছে বিগত ২৭ বছরে

জীবিকার সন্ধানে অনেকেই নিজের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু হাসি ফোঁটাতে পারি জমান প্রবাসে। হাড়ভাঙ্গা খাঁটুনি খেটে মাস শেষে দেশে কিছু টাকা পাঠান। তা দিয়েই কারো বোনের বিয়ে হয়, মা-বাবার চিকিৎসা হয়, ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ চলে, স্ত্রীর একটু আয়েশের ব্যবস্থা ছাড়াও সন্তানদের বিভিন্ন শখ পুরণ হয়। কিন্তু সেই উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটাই যখন লাশ হয়ে বাদামি কফিনের প্যাকেট হয়ে দেশে ফিরে তখন ভেঙে যায় সব স্বপ্ন।

কেউ কেউ দুর্ঘটনায় কিংবা কেউ কেউ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান প্রবাসের মাটিতেই। তাদের লাশ দেসে আনার ব্যবস্থা করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়। এমনকি বিমানবন্দর থেকে লাশ পরিবহন ও দাফনসহ আর্থিক ক্ষতিপূরণও প্রদান করে সরকার।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দেখা যায়, ১৯৯৩ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৩৮ হাজার ২৪ জন প্রবাসীর মরদেহ দেশে এসেছে।

আবার চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্তই দেশে ফিরে ১ হাজার ৬৯৮ জন হতভাগ্য প্রবাসীর মরদেহ। তবে এসব মরদেহের ৫০ ভাগেরও বেশি এসেছে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া থেকে।

বছরওয়ারি (১৯৯৩ থেকে জুলাই ২০২০) পরিসংখ্যানে ফেরত আসা প্রবাসীকর্মীদের মৃত দেহের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫৩ জন, ১২৮ জন, ২৪১ জন, ১৯৯ জন, ২৭৪ জন, ২৪৮ জন, ২৮৮ জন, ৪১২ জন, ৩৮৫ জন, ৫৯৭ জন, ৫১৯ জন, ৭১৬ জন, ৬৯১ জন, ৭১৮ জন, ৯৬৬ জন, এক হাজার ১৩৩ জন, এক হাজার ৩৬৪ জন, দুই হাজার ২১২ জন, এক হাজার ৮৬৯ জন, দুই হাজার ২০১ জন, দুই হাজার ৪১৯ জন, দুই হাজার ৭১৮ জন, দুই হাজার ৬৯৫ জন, দুই হাজার ৯৫১ জন, তিন হাজার ২৬৩ জন, তিন হাজার ৬৭৬ জন, তিন হাজার ৬৫৮ জন এবং এক হাজার ৪৩০ জন।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গত আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট এক হাজার ৬৯৮ জন প্রবাসীকর্মীর লাশ ফেরত আসে। মোট লাশের মধ্যে জানুয়ারিতে ২৯৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৯ জন, মার্চে ১৪০ জন, এপ্রিলে ১৬ জন, মে-তে ১১৬ জন, জুনে ২৮২ জন, জুলাইয়ে ৩১০ জন এবং আগস্টে ২৮০ জন প্রবাসীকর্মীর লাশ দেশে ফেরত আসে।

জানা গেছে, দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট) প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের মাধ্যমে যেকোনো প্রবাসীকর্মীর মৃতদেহ দেশে আসলে তাদের লাশ পরিবহন ও দাফন সম্পন্ন করার জন্য ৩৫ হাজার এবং আর্থিক সাহায্য হিসেবে তিন লাখ টাকা করে দেয়া হয়।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর