পাচঁ’শ টাকার কাজে ৭০ হাজারের বিল!

যারা নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন তারাই আকাশে মেঘ দেখলে নিজেদের আবাসস্থলের কথা ভেবে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কুষ্টিয়ার মিরপুর ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্সের বাসিন্দারা এভাবেই বাস করছেন তাদের জন্য নির্মাণ করা ভবনে।

২০০৫ সালের ১২ জুলাই কুষ্টিয়ার মিরপুর ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্সের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনের পর গত ১৪ বছরে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগ সেবামূলক সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানের রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ গ্রহন করেনি।

গণপূর্ত বিভাগের অব্যাহত গাফিলতিতে প্রতিষ্ঠানটি গত ১৪ বছরে মিরপুর ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্স অফিসটির রং উঠে বিকৃত হবার পাশাপাশি অফিস, বাউন্ডারি প্রাচীর ও স্টেশন অফিসারের বাসভবনের ওয়াল থেকে বালি-সিমেন্ট মিশ্রিত প্লাস্টার উঠে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ করে নীচতলার অফিস, দ্বোতলায় ফায়ারম্যানদের ব্যারাক ও পাশেই স্টেশন অফিসারের বাসভবনের লোহার ফ্রেমের সঙ্গে কাঁচ দিয়ে লাগানো জানালার ৯৫ ভাগ ভেঙ্গে গেছে। শীতকালে ভাঙ্গা গ্লাস দিয়ে যেমন ঠাণ্ডা হাওয়া প্রবেশ করে, বর্ষায় রুমগুলোতে তেমনি পানি ঢোকে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও হুমকিতে।

এ বিষয়ে মিরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রুহুল আমিন বলেন, ‘আমিসহ এ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন উদ্বোধনের ১৪ বছরে পূর্বতন স্টেশন অফিসাররাও অফিসটির বেহাল অবস্থা লিখিতভাবে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগে অসংখ্যবার লেখালেখি করেছে। কিন্তু কোনো ফল মেলেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘কিছুদিন আগে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগ থেকে দুই ডজন ইলেকট্রিক সুইচ ও ৭ টি হোল্ডার লাগিয়ে ৫/৬ শত টাকার কাজ করে ৭০ হাজার টাকার বিল ভাউচার সই করতে এসেছিল। তাতে সই না করায় তারা মনক্ষুন্ন হয়।’

একই বিষয় নিয়ে কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত সহকারি পরিচালক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অভিন্ন কথা বলেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিশিয়াল মুঠোফোনে বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে গত ১৮ মার্চ মিরপুর ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রুহুল আমিনের অনুরোধে অফিসটি পরিদর্শন করেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জামাল আহমেদ। তিনি পরিদর্শনকালে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের বেহাল অবস্থা দেখে রীতিমত বিস্মিত হন। পরে তিনি কুষ্টিয়া গণপূর্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপ করে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর