ফেসবুকের লাইভস্ট্রিম বন্ধের দাবি!

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা চালানোর সময় ঘাতক ব্রেনটন টেরেন্টের ফেসবুক লাইভ কেন প্রচার করেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক সে বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

ওই হামলার ঘটনা ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার পর থেকে ফেসবুকের ওপর বৈশ্বিক চাপ বাড়ছে।

ফেসবুকের ওপর অভিযোগ উঠেছে যে, ফেসবুক কীভাবে আপত্তিকর সহিংস কন্টেন্ট তাদের প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে ও ইতোমধ্যে ফেসবুকের লাইভস্ট্রিম বন্ধের দাবি উঠছে।

এবার সেসব দাবির প্রেক্ষিতে ফেসবুক দাবি জানিয়েছে, ব্রেনটন টেরেন্টের সেই বর্বর হামলা ঘটনার লাইভ ২০০ জনও দেখেনি।

তবে হামলার ওই লাইভ ভিডিওটি ফেসবুক থেকে মুছে ফেলার আগে তা ৪ হাজারবার দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ফেসবুকের গ্লোবাল পলিসি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মণিকা বিকার্ট দৈনিক নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডেকে বলেন, ‘হামলার ঘটনাটি যখন লাইভ করা হচ্ছিল তখন তা দেখে ২০০ জনেরও কম মানুষ। তাছাড়া ভিডিওটি লাইভ হওয়ার পর সেটি মুছে ফেলা পর্যন্ত আনুমানিক ৪ হাজার মানুষ তা দেখে।’

মসজিদে হামলার ওই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার শেষ হওয়ার ১২ মিনিট পরও কোনো ফেসবুক ব্যবহারকারী হামলার ভিডিওটি নিয়ে তাদেরকে রিপোর্ট করেননি বলে দাবি জানান মণিকা বিকার্ট।

তবে নির্বিচারে মানুষ হত্যার ওই ভিডিওটিকে ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পদ্ধতিকে সহিংস ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেনি বলে স্বীকার করেন ফেসবুকের গ্লোবাল পলিসি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট।

ফেসবুকের সদর দফতর তিনি নিউজিল্যান্ডের ওই দৈনিককে জানান, ‘আমাদের প্রযুক্তি বিষয়টি যে কতটা নৃশংস তা বুঝেনি। তাছাড়া যখন লাইভ করা হয় তখন কেউ আমাদের রিপোর্ট করেননি।’

এমন একটি হত্যাযজ্ঞের লাইভ প্রচারিত হয়েছে তা নিউজিল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে প্রথম জানতে পারে ফেসবুক কর্তপক্ষ। আর তাদের কাছ থেকে আপত্তি আসার পরই ভিডিওটি দ্রুত মুছে ফেলেন বলে জানান মণিকা বিকার্ট।

এর আগে রোববার টুইটারে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এক বার্তায় জানিয়েছিল, গত ২৪ ঘণ্টায় নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার সেই ভিডিও ১৫ লাখ ভিডিও সরিয়ে ফেলেছে ফেসুবক। ফেসবুক প্লাটফর্ম থেকে ভিডিওটি সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

এ বিষয়ে ফেসবুক নিউজিল্যান্ডের কর্মকর্তা মিয়া গারলিক বলেন, ‘আমরা প্রযুক্তি ও মানুষের সাহায্য নিয়ে ওই ভিডিও সরিয়ে ফেলতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।’ প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ডানপন্থী শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেনটন টেরেন্টের গুলিতে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন অন্তত ৪৮ জন।

ঘাতক টেরেন্ট শুধু নির্বিচারে গুলি করে গণহত্যাই চালাননি তিনি সেই দৃশ্য টানা ১৭ মিনিট ফেসবুকে লাইভ করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারী স্বয়ংক্রিয় বন্দুক নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে মসজিদের দিকে যাচ্ছেন। মসজিদের প্রবেশ করেই মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে বৃষ্টির মতো গুলি করা শুরু করেন।

আতঙ্কিত মুসল্লিরা মসজিদের ভেতর ছুটোছুটি করতে থাকে। তার গুলি থেকে রেহায় পায়নি কেউ। এমনকি ৩ বছরের অবুঝ শিশু মুকাদ ইব্রাহীমকেও গুলি করে শহীদ করে এই সন্ত্রাসী।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর