মধুমতি নদী রক্ষাবাঁধে আবারো ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদী রক্ষাবাঁধে আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম অংশে হঠাৎ করেই আবারও মধুমতি নদী রক্ষাবাঁধে ভাঙ্গন শুরু হয়। দেখতে দেখতে মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে বাঁধের প্রায় একশ’ মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ সময় বাঁধের ওপর বসবাসরত কয়েকশ’ পরিবারের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে অনেকে ভাঙন ঝুঁকিতে বাড়িঘর অন্যত্র ছড়িয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ঘটনার সময় রক্ষাবাঁধের ওপর বসে কয়েকজন নারী পাটের আঁশ পৃথকীকরণের কাজে ব্যস্ত ছিলেন৷ মুহূর্তের মধ্যে দেখতে দেখতে ধসে যেতে থাকে বাঁধ। নারীরা দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে গেলেও চোখের পলকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় রক্ষাবাঁধের কোলঘেঁষে থাকা জুয়েল শরীফের সম্পূর্ণ বাড়িটি। মাত্র এক ঘন্টা সময়ের মধ্যে ওই বাড়ীসহ বাঁধের প্রায় একশ’ মিটার এলাকা ধসে যায়।

কান্নাজড়িত কন্ঠে জুয়েল শরীফ জানান, ‘আমাদের স্থায়ী বাড়ি ছিলো খোলাবাড়িয়া গ্রামে। আট বছর আগে সেই বাড়িটিও নদীতে ভেঙে যায়। পরবর্তীতে এই জায়গাতে রক্ষাবাঁধ তৈরী হলে এখানে এসে বাড়ি করি। কিন্তু রক্ষাবাঁধে এসেও যে শেষ রক্ষা হলো না।’

প্রায় ২২কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মধুমতি নদী রক্ষাবাঁধে প্রথম ভাঙন শুরু হয় গতবছর। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ওইদিন বাঁধের ৫০ মিটার এলাকা মধুমতিগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান বার্তা বাজারকে মুঠোফনে জানান, ‘মধুমতি রক্ষাবাঁধে ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙন স্থানে আগামীকাল থেকেই জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছিলেন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির মধ্য দিয়ে গত ২০১৭ সালে অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ দেখিয়ে কাগজে কলমে প্রকল্পটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রকল্পের নির্ধারিত পরিকল্পনাসহ নকশা লংঘন, অর্থ অপচয় এবং বরাদ্দকৃত টাকা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় না করে অব্যয়িত রাখায় সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

বার্তাবাজার/কেএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর