শেরপুরে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি, তদন্তের নির্দেশ

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিধিমালা লঙ্ঘন। প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত রেজুলেশনবিহীন এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার শেরপুরের দোয়ালসাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্বাক্ষর জালিয়াতি সংক্রান্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে তড়িঘড়ি করে অবৈধভাবে সভাপতি মনোনয়ন দিয়েছে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড।

অপরদিকে স্বাক্ষর জালিয়াতির ও নানা অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ৭জন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। শুন্য সভাপতি পদে অনিময়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)কে সরেজমিনের তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, শেরপুর উপজেলার দোয়ালসাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সদ্য যোগদানকৃত প্রধান শিক্ষাক নুর মোহাম্মদ গত ২৫ জুন যোগদান করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে। বিদ্যালয়ে যোগদানের কয়েকদিন পরে ম্যানেজিং কমিটির শুন্য সভাপতি পদে মনোনয়নের জন্য শিক্ষাবোর্ডের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে বাতিল হওয়া সভাপতি পদ পুনঃগঠনের লক্ষে একটি চিঠি দেয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তাসহ সংশ্লিস্টদের কাছে।

এর প্রেক্ষিতে ওই প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ আলী তার মনোনীত ব্যক্তিকে সভাপতি বানাতে উঠেপড়ে লাগে। এর ফলশ্রুতিতে ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে কোন মিটিং না করে এবং প্রিজাইডিং অফিসার স্বাক্ষর বিহীন নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করেন। পরে প্রধান শিক্ষক গত ৯ আগষ্ট ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের জাল স্বাক্ষরিত আবেদনসহ ভূয়া রেজুলেশন দিয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করে।

এতে শিক্ষাবোর্ডের চেয়াম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা বিধিমালা লঙ্ঘন করে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত রেজুলেশনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই একদিনের ব্যবধানে তড়িঘড়ি করে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শুন্য সভাপতি পদে মনোনয়ন দেয়। এতে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের আদেশক্রমে বিদ্যালয় পরিদর্শক ১০ আগস্ট স্মারকে ৩/এস/৪৭/৫৭৯ সহিদুজ্জামানকে ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত সভাপতি পদে নিয়োগ দেন।

এদিকে একই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মিটিং না করে এবং প্রিজাইডিং অফিসার স্বাক্ষর বিহীন নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করে অন্যান্য সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন করার প্রক্রিয়াকাজ অবগত হয় সদস্যরা।

এ ঘটনায় ১০ আগস্ট ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ৭জন সদস্য তাদের প্রকৃত স্বাক্ষর দিয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে যথাযথ প্রক্রিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ৩/এস/৪৭/৫৭৮নং স্মারকে সভাপতি পদে অনিময়ের অভিযোগ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বগুড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি)কে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছেন।

সভাপতি নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে কিনা মর্মে কথা বললে ওই বিদ্যালয়ে সদ্য যোগদানকৃত প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ আলী বলেন, এসব বিষয়ে আপনাদের সাথে কোন কথা বলতে পারবো না। আপনারা পত্রিকায় লিখে যা পারেন করেন?

এ প্রসঙ্গে শেরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজমুল হক বলেন, উপজেলার দোয়ালসাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শুন্য সভাপতি নির্বাচন সংক্রান্ত একটি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছে। তবে ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্যদের নিয়ে কোন মিটিং বা সভা হয়নি। তাছাড়া সভাপতি পদে নির্বাচন সংক্রান্ত মিটিংয়ে নিজে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং আমার স্বাক্ষরিত রেজুলেশনই শিক্ষাবোর্ডে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে ওই প্রধান শিক্ষক কিভাবে মিটিং করেছে এবং তাতে অদ্যবধি কোন স্বাক্ষর বা সিল মোহর দেয়া হয়নি বলে দাবী করেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তা।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর