অডিও ক্লিপ ভাইরাল: পটুয়াখালীতে কিশোর গ্যাংয়ের মূল হোতার রহস্য ফাঁস

পটুয়াখালীতে কিশোর গ্যাংয়ের একটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে মূল হোতা হিসেবে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত নেতা আহসান হাবিব খাঁনের ছেলে আদনান হাবিব খাঁন (আদর) এর নাম উঠে এসেছে। সোমবার (১০ আগস্ট) অডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয়।

পটুয়াখালী শহরের আতঙ্কের আরেক নাম এই প্রয়াত নেতার ছেলে আদনান হাবিব খাঁন (আদর)। যিনি ঢাকায় বসে পটুয়াখালীতে তার ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করার লক্ষ্যে পটুয়াখালীকে গড়ে তুলেছেন তার রাজত্ব হিসেবে।

পটুয়াখালীতে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখলসহ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তার নাম যেনো এগিয়ে আছে সবার শীর্ষে। তার এই কর্মকাণ্ডে কেউ যদি বিঘ্ন ঘটায় বা প্রতিবাদ করতে চায়, তবে সে হবে আদরের তৈরি করা কিশোর গ্যাংয়ের হাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার।

কিছুদিন আগে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল পটুয়াখালীতে কিশোর গ্যাং হামলার একটি হামলার ঘটনা। যেখান সিফাত, রিজন, আরমান, পুলুক, হিমেলসহ অনেকের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে। কিন্তু আজ অডিও ক্লিপ মাধ্যমে সব পরিষ্কার হয়ে গেছে মিডিয়ার সামনে এবং পটুয়াখালী কিশোর গ্যাংয়ের মেইন হোতার রহস্য ফাঁস হয়ে গেছে। মিডিয়া যাদেরকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন, তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য নন বরং কিশোর গ্যাংয়ের শারীরিক নির্যাতন ও চক্রান্তের শিকার।

শারীরিক নির্যাতন ও চক্রান্তের শিকারকৃত কিশোররা বলেন, ‘আদর’ সর্বদা নিজেকে একজন ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে চরপাড়া এলাকার চিহ্নিত জামাত-বিএনপি’র কর্মী, একাধিকবার গাঁজা ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার হওয়া মুন্না, নিবিড় ও ফিরোজকে দিয়ে পটুয়াখালীর মাদক নিয়ন্ত্রণ করে। তারা পটুয়াখালী শহরে আদর-সিয়াম গ্যাং হিসেবে পরিচিত। আমরা তাদের এই কার্যক্রম বন্ধ করতে চাইলে, আমরা তাদের দ্বারা একাধিকবার আমার হামলার শিকার হই। আমাদের পরিবারসহ আমাদের মারধর করে, প্রাণনাশের হুমকি দেন‌ ও আমাদের বাসা-বাড়ি ভাঙচুর করেন এবং কোনবারই থানায় গিয়ে প্রতিকার বা রেসপন্স পাইনি। কারন তারা অনেক ক্ষমতাশালী। তাদের এই নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলাম আমরা প্রতিনিয়ত। এক পর্যায়ে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে ওদের উপর আক্রমণ করে বসি এবং সেই থেকে আমাদের নাম কিশোর গ্যাংয়ের ঢুকিয়ে দিলো ওরা। শুধু আমরাই নয়, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের নেতা সবুর ভাই, রিফাত ভাইও এই কিশোর গ্যাংয়ের বানাচালে শিকার হয়েছেন। মানে যারা এই আদর-সিয়াম‌ গ্যাংয়ের এই সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে চাইবে তাদের হতে হবে কোন না কোন সমস্যা সম্মুখীন।

কিশোর গ্যাং দ্বারা শারীরিক নির্যাতিতরা আরো জানান, এদের কে ছায়া দিচ্ছে এ সমাজের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে তারা উল্লেখ করেন, কিছু কিছু মিডিয়ার লোকদের কথা। কারন তারা সত্যি রহস্য না জেনেই লেখা-লেখি করেন, যার শাস্তি স্বরূপ ফল ভোগ করেন সাধারণ লোকজন এবং উপকৃত হয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

মিডিয়ার লোকদের প্রতি কিশোর গ্যাং দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা সত্য ঘটনাকে তুলে ধরতে এবং পটুয়াখালীকে কিশোর গ্যাং মুক্ত সহায়তা করতে আহ্বান জানান। সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীক কাছে দাবি জানান, এই কিশোর গ্যাং বাহিনীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তি প্রদান করার জন্য।

পটুয়াখালী সদর থানার ওসি আখতার মোর্শেদ জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হবে।

বার্তা বাজার / ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর