ওকস-বাটলারের কাছে হেরে গেলো পাকিস্তান

বোলিংয়ে শুরুটা ভালো করলেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি পাকিস্তান। জয়ের জন্য ২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর যেভাবে পাকিস্তানি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা, তাতে মনে হচ্ছিল এই টেস্টে জয় পাকিস্তানেরই। কিন্তু টেস্ট সত্যিই গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। এক সেশনে পাকিস্তানি বোলাররা ভালো করলেও পরের সেশনে প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়ান জস বাটলার আর ক্রিস ওকস।

বাটলার আর ওকসের ১৩৯ রানের এক অসাধারণ জুটি। এই জুটিতেই পাকিস্তানের পরাজয় নির্ধারিত হয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে পাকিস্তানি স্পিনার ইয়াসির শাহ আবারও ঘূর্ণি ঝড় তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুঁজির অভাবে সেই ঝড় কাজ দিলো না। ঠিকই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

একদিন হাতে রেখেই ৩ উইকেটে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্ট জিতে নিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো স্বাগতিক ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ইয়াসির শাহ। কিন্তু বাটলারের ৭৫ এবং ক্রিস ওকসের অপরাজিত ৮৪ রানের ওপর ভর করে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে ইংলিশরা।

বাটলার ৭৫ রান করে আউট হয়ে গেলেও ৮৪ রান করা ওকস ছিলেন অপরাজিত। দারুণ অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যাচ জয়ে অসাধারণ ভূমিকা রাখায় সেরার পুরস্কারও উঠেছে ক্রিস ওকসের হাতে। প্রথম ইনিংসে ১৯ রান করেছিলেন তিনি। বল হতে ২+২ মোট ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর একটা সময় ২ উইকেটেই ৯৬ রান তুলে ফেলেছিল ইংলিশরা। সেখান থেকে হঠাৎ ব্যাটিং ধস। ২১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছে জো রুটের দল। পড়ে গেছে হারের শঙ্কায়।

রান তাড়ায় শুরুটা বেশ দেখেশুনে করেছিল ইংল্যান্ড। ১১ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে ২২ রান তুলেন ররি বার্নস আর ডম সিবলি। ১০ রান করা বার্নসকে এলবিডব্লিউ করে জুটিটি ভাঙেন মোহাম্মদ আব্বাস।

এরপর জো রুট আর সিবলির ৬৪ রানের প্রতিরোধ গড়া জুটি। ৩৬ রানে সিবলিকে ফিরিয়ে ইংলিশদের ফের ধাক্কা দেন ইয়াসির শাহ। এরপর নাসিম শাহর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপে ক্যাচ রুট (৪২)।

সেখান থেকে টপাটপ উইকেট তুলে নিয়েছেন পাকিস্তানি বোলাররা। ইয়াসির শাহর ঘূর্ণিতে বোকা বনে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন বেন স্টোকস (৯)। প্রথম ইনিংসে ইংলিশদের ভরসা দেয়া অলি পোপকে (৭) সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ফলে ১১৭ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে ইংলিশরা।

এরপরই জুটি বাধেন জস বাটলার এবং ক্রিস ওকস। ১১৭ রান থেকে এ দু’জন মিলে ইংল্যান্ডকে নিয়ে যান ২৫৬ রানে। এ সময় আউট হন জস বাটলার। স্টুয়ার্ট ব্রড আউট হন ৭ রান করে। ডোম বেজ কোনো রান না করলেও অপরাজিত থেকে ক্রিস ওকসকে জয়সূচক রান নিতে সহযোহগিতা করেন।

ইয়াসির শাহের ৪ উইকেটের সঙ্গে নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং মোহাম্মদ আব্বাস নেন ১টি করে উইকেট।

প্রথম ইনিংসে শান মাসুদের ১৫৬ রানের ওপর ভর করে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৩২৬ রান। জবাবে ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় ২১৯ রানে। ১০৭ রান এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। ফলে মাত্র ১৬৯ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। যে কারণে ইংল্যান্ডের সামনে তাদের লিড দাঁড়ায় কেবল ২৭৬ রানের। চতুর্থ দিন বিকেলেই জয়ের কাজ সেরে নেয় ইংল্যান্ড।

কেএস/বার্তাবাজার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর