নারী সমাজের প্রেরণার উৎস ফজিলাতুন্নেছা মুজিব: রাষ্ট্রপতি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাঙালির অহংকার, নারী সমাজের প্রেরণার উৎস।

রাষ্ট্রপতি বলেন ‘১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জন্মগ্রহন করেন। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন সাহসী ও দৃঢ়চেতা। যে-কোনো পরিস্থিতি তিনি বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা দিয়ে মোকাবিলা করতেন। তিনি কেবল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনীই ছিলেন না, বাঙালীর মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত।’

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এই মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘এ বছর বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’ যা মহীয়সী এ নারীর জীবন ও কর্মের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত এবং যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

মো. আবদুল হামিদ বলেন, দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলো স্বামীর পাশে থেকে দৃঢ়তার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। পরিবারের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা, দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাঁকে করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তাঁরই অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত যে অলিখিত ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা ছিল স্বাধীনতার ডাক। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাঁকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, বঙ্গমাতা ছিলেন নির্লোভ, নিরহংকার ও পরোপকারী। পার্থিব বিত্ত-বৈভব বা ক্ষমতার জৌলুস কখনো তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পত্নী হয়েও তিনি সবসময় সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন, গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করতেন। তিনি ছিলেন আদর্শ বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হন। জাতির ইতিহাসে সে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ সবসময় আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।- বাসস

বার্তা বাজার / ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর