টেকনাফে ক্রসফায়ার বানিজ্যে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো ‘কপু’ নেতা

কক্সবাজারে টেকনাফে ‘ক্রসফায়ারের’ নাম ভাঙ্গিয়ে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কথিত নেতার বিরুদ্ধে দশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বুধবার টেকনাফ উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নেতা নুরুল হোসাইন ও আব্দুল কাইয়ুমকে অভিযুক্ত করে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন ভুক্তভোগী মো. ইউনুছ। তিনি সেন্টমার্টিন দ্বীপের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গেলো ২৭ জুলাই সকালে সেন্টমার্টিন পূর্ব পাড়ার জামাল উদ্দিন ওরফে মইস জামালের ছেলে জুবাইরকে সেন্টমাটিন পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. কাশেম ডেকে নিয়ে যায়। পরে একই এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে মো. আজিমকে ডেকে আনেন। পরবর্তীতে দুই জনকে স্পীড বোট যোগে টেকনাফ থানায় নিয়ে আসা হয়। আটক জুবাইরকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য জুবাইরের ভাই মো. ইউনুছের কাছ থেকে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং নেতা নুরুল হোসাইন ও আব্দুল কায়ুম ১০ লাখ টাকা দাবী করেন।

ঘটনার পরের দিন ২৮ জুলাই ভূক্তভুগী পরিবার অনেক কষ্টে বাড়ীর জমি বিক্রির বন্ধক রেখে ৪ লাখ টাকা নুরুল হোসাইনের হাতে প্রদান করেন। বাকী টাকা পরের দিন না দিলে জুবাইরকে ‘ক্রসফায়ারের’ হুমকি দেয়। এই ভয়ে ভাইকে রক্ষায় গত ২৯ জুলাই সন্ধায় আরো ৬ লাখ টাকা তাকে দেন। এসময় ওসিকে টাকা দিয়ে জুবাইরকে ছাড়িয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও জুবাইরকে ছাড়িয়ে নিতে না পারলে কমিউনিটি পুলিশিং নেতার কাছ থেকে দেওয়া টাকা ফেরৎ চাইলে তাল বাহানা শুরু করেন এবং এসব টাকা টেকনাফ থানার ওসিকে দিয়েছেন বলে অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে চলে। সর্বশেষ টাকা ফেরৎ দেবেনা বলে সাফ জানিয়েদেন। কিন্তু আটক জুবাইর থানায় নাকি অন্য কোথায় আছেন সেই খবর জানা নেই তার পরিবারের।

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী মো. ইউনুছ বলেন, ‘আমার ভাই একজন মাছ ব্যবসায়ী। সেই কোন অপরাধের সাথে জড়িত নই। আমার ভাই জুবাইরকে অহেতুক আটক করে পুলিশ। ‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং নেতা দশ লাখ টাকা নিলেও ১০ দিন পর্যন্ত ভাইয়ের কোন হদিস পায়নি। গতকাল (৬আগষ্ট) ভিন্ন একটি মামলায় সন্দেহজনক আসামী দেখিয়ে আমার ভাই জুবাইরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের কাছ থেকে টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে কমিউনিটি পুলিশিং এর কথিত নেতা নূর হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। একই রকম ভাবে তার বিরুদ্ধে বার্তা বাজারকে এই পর্যন্ত দুই ডজনের বেশি মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগকারীদের অনেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

বার্তা বাজার / ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর