এখনও শুকায়নি আবরার ফাহাদের মায়ের চোখের জল

গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী। এই ঘটনায় সারাদেশেই তুমুল আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

আবরার ফাহাদরা দুই ভাই। দুই সন্তানই ছিল তাদের মায়ের দুই চোখের মণি। এক ছেলেকে এইভাবে হারিয়ে এখন সেই দু’চোখে কেবলই কান্নার নোনা জল।

নৃসংশ সেই হত্যার ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এভাবে এক সম্ভাবনাময় তরুণের মৃত্যুর স্মৃতি ভোলার নয়। একজন মায়ের জন্য তা আরো কষ্টের। কষ্ট আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজেরও।

শনিবার ঈদুল আজহার আগের দিন শুক্রবার তিনি ছবিসহ জানিয়েছেন সেই বেদনার কথা।

আবরার ফাইয়াজ তার ফেইসবুকে লেখেন-

‘আজ পবিত্র ইদুল আযহা।

এবার অবশ্য গ্রামে এসেছি।

সাধারণত আগে আম্মু, ভাইয়া, আমি ঈদ করতে গ্রামে আসতাম। আব্বু বাসায় থাকত। আব্বু এবারো বাসায় আছে। আমি আর আম্মু গ্রামের বাড়িতে। আমরা ৯ ভাইবোনই গ্রামে থাকি এই সময়ে। কিন্তু এবার ৮ জন।

বাড়ির বড় ছেলে হিসাবে প্রায় সবকিছুতেই ও সামনে থাকতো।এবার ভিন্ন। এবার ভাইগুলা আমার দিকে তাকাচ্ছে, কিন্তু আসলে আমি কার দিকে তাকাবো সেটাই বুঝছি না। ছোট থেকে খুব একটা সিরিয়াস মাইন্ডের মানুষও না আমি… সব বিষয়ে ভাইয়াই বলতো কখন কী করব, কই যাবো। গ্রামে একা একা গেছি এমন জায়গাও কম। কিছু বছর ধরেই ঈদগুলো মূলত ভাইয়ার সাথে গল্প করেই কাটত ।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আম্মুর। বাড়ি আসার পর এক মুহূর্তের জন্যও চোখ পানি ছাড়া দেখলাম না। একটু পরপরই বলে উঠছে “সবাই আসছে, রাব্বি আসে নাই, রাব্বি তো আর নাই, আর কোনো দিন আসবেও না।ঘুমানোর আগ পর্যন্ত ও আর আসবে না আসবে না বলছিল”।

বাড়ির সবাই কিংবা আশেপাশের সবাই ও কেমনভাবে তাকাচ্ছে যেন।

গত বছর ও কুরবানীর ঈদের আগের দিন সবাই মিলে কত মজা করছিলাম… ভাইয়া নিজেই সবাইকে নিয়ে খেতে গেল। সেই দিন কীভাবে যেন ভাইয়া অনেক দিনের প্রিয় এই টুপিটা হারিয়ে ফেলেছিল।

কোনোদিন আর সেভাবে ঈদ করা হবে না।

সবাই দোয়া করবেন ওর জন্য। সামনে যেন দ্রুতই বিচার শেষ হয় সেজন্যও।

ঈদ মোবারক।’

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর