জীবন সংগ্রামী এক নারী জেলে দিলারা বেগম

ফজরের আজানের পর পরই নৌকা নিয়ে নেমে পড়েন নদীতে। আগের দিন রাতে পেতে রাখা জাল ও বড়শীতে আটকা পড়া মাছ খুলে খুলে নৌকার একাংশে জমা করেন। ভোর হতেই জালে আটকা পড়া মাছ নিয়ে চলে যান স্থানীয় বাজারে। মাছ বিক্রি করে যে টাকা আসে তা দিয়ে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ীতে ফেরেন।

সকালের নাস্তা খেয়ে আবারও সাংসারিক কাজ শেষ করে নেমে পড়েন নদীতে পাতা জালগুলোকে পরিষ্কার করে পুণরায় পাতার জন্য। বিকেলে সেগুলো থেকে আটকা পরা মাছ খুলে নিয়ে ইছামতী নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে নিয়ে বিক্রি করেন দিলারা বেগম (৫৫) নামে বেদে সম্প্রদায়ের একজন নারী৷

তার ঠিকানা নদীর ভাসমান পানিতে হলেও সিরাজদিখান উপজেলার দানিয়াপাড়া ফাইভ স্টার কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন একটি ভিটে কিনে বসবাস করে আসছেন তিনি এবং তার পরিবার। সংসারে স্বামী সন্তান থাকলেও বেদে সম্প্রদায়ের নিয়ম অনু্যায়ী মেয়েদেরই যাবতীয় কাজ করতে হয়। ছেলেরাও সংসারের খরচ যোগান দিতে মেয়েদের পাশাপাশি কাজ করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসে কবলে পরে বেদেদের সিংহভাগ ছেলেরা কর্মহীন হয়ে পরেছে। জীবন যুদ্ধে বেচে থাকার অংশ হিসেবে মাঝ বয়সে এসেও দিলারা বেগমের নৌকা নিয়ে নদীতে ছুটে চলা।

এভাবেই চলছে তার জীবন। করোনা সংকটকালীন সময়ে কোন সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে একেবারেই অসহায় তার পরিবার। তিনি ছাড়াও তার মত বেদে সম্প্রদায়ের অনেক মেয়েকেই নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। অনেকে আবার মাছ ধরার পাশাপাশি বাড়ীতে জাল বুনানোর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারী কিংবা স্থানীয় সাহায্য সহযোগিতা পেলে তাদের ভাল থাকা সম্ভব হতো।

দিলারা বেগম বলেন, মাছ ধরা ছাড়া বর্তমানে আমাদের কিছুই করার নাই। ভাইরাসের কারণে এলাকায় ঘুরে ঘুরে জিনিসপত্র বিক্রি করার কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। যদি আমরা সরকার থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পেতাম তাহলে আমাদের চলতে সুবিধা হতো।

বার্তা বাজার / ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর