কুড়িগ্রামে ২য় দফা বন্যা, পানিবন্দি লাখো মানুষ

কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলের পানির কারনে জেলার ধরলা, দুধকুমার, ফুলকুমার, ব্রহ্মপুত্রসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা সদরের, যাত্রাপুর, হলোখানা, ভেলাকোপা, উপজেলা শহরগুলোর রায়গঞ্জ, আন্ধারীঝার, দলদলিয়া, চিলমারী, রমনা, হাতিয়াসহ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৯ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ।

তলিয়ে গেছে এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তাসহ উঁচু এলাকারও পাকা-আধা পাকা সড়ক, জমির ফসল, পাটক্ষেতসহ নিমজ্জিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও। যার ফলে জেলায় ২য় দফায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হয়েছে।

চরাঞ্চলের মানুষগুলো অনেকেই উঁচু ভিটা, নৌকা ও চৌকির ওপর আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ নিকটবর্তী বাঁধ, রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। তবে প্রবল বর্ষণের কারণে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়া পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে।

জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, সোমবার (১৩ জুলাই) সকাল ৭টায় ধরলার পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারীতে ৪৫ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্ট ৪৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জের বাসিন্দা মামুনুর রশিদ জানান,”আমাদের সবার বাড়ি ও টিউবওয়েল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কোনরকমে চৌকির ওপরে বসবাস করছি। রান্না করা ও বিশুদ্ধ পানির খুবই সমস্যা পড়ছি আমরা।”

উপজেলার আন্ধারীঝার ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.জাফর আলী বলেন, “আমার ইউনিয়নের ১টি গ্রাম সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে, অন্যদিকে বাকি গ্রামগুলোর মানুষ পানিবন্দি জীবন যাপন করছে। গত বন্যার কিছু বরাদ্দ ছিল তা বিতরণ করা হয়েছে নতুন করে এখনও বরাদ্দ পাইনি।”

জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার দেয়া তথ্যমতে জানা যায়, ২য় দফার এই বন্যার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত খাদ্য ও নগদ টাকা মজুত রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার সবকটি উপজেলায় ৪ লাখ সাড়ে ২৮ হাজার পরিবারের জন্য ভিজিএফ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বন্যা মোকাবিলায় খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৩৯০ মেট্রিক টন চাল ও ৮ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শিশু ও গো খাদ্য বাবদ আরও দুই লাখ করে টাকা মজুত রয়েছে।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর