মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের ওপর নিপীড়নের তদন্ত ও রায়হানের নিরাপত্তা দাবি ২১ সংগঠনের

মহামারি করোনাভাইরাসের সময়ে মালয়েশিয়ার অভিবাসী কর্মীদের ওপর চলা নিপীড়নমূলক আচরণ নিয়ে আল-জাজিরায় কথা বলেন রায়হান নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি। এরপর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ওই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সমন জারি মালয়েশিয়া।

রায়হানের বিরুদ্ধে সমন জারি করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অভিবাসন খাতের ২১ টি সংগঠন।

মালয়েশিয়া সরকারের কাছে সাংবাদিক ও প্রবাসীদের কোন ধরনের হয়রানি না করার আহ্বান জানিয়েছে এসব সংগঠন। এ ব্যাপারে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন, ঢাকার পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। আজ শনিবার ২১ টি সংগঠনের একটি যৌথ বিবৃতিতে এই আহবান জানানো হয়।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩ জুলাই লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট-শীর্ষক প্রতিবেদনটি আল-জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হয়। এতে দেখানো হয়, মালয়েশিয়া সরকার মুভমেন্ট কনট্রোল অর্ডার (এমসিও) এর মাধ্যমে মহামারির সময়ে অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়ার নিপীড়েনের যে ছবি উঠে এসেছে সেটা নিন্দনীয় ও গভীর উদ্বেগের।

মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি এই ধরনের অভিযোগে অতীতেও ছিল উল্লেখ করে বিবৃতিটিতে বলা, মালয়েশিয়া সরকাররে এই ঘটনাগুলো তদন্ত করা উচিত। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি এই ঘটনার পর আল জাজিরার সাংবাদিকদের ডেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মালয়েশিয়া। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সাথে আমরাও এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আল জাজিরার প্রতিবেদনে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় বাংলাদেশি একজন তরুণ মো. রায়হান কবিরকেও (২৫) খোঁজা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে মালয়েশিয়া ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। তাতে বলা হয়েছে, রায়হান কবিরের ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে সমন জারি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্থানীয় প্র্রশাসন যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা দেখেছি, রায়হানের বিষয়ে তথ্য জানতে এরই মধ্যে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ও পুলিশের আইজি গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।

এতে আরও বলা হয়, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়া কোন অন্যায় নয়। আর রায়হান কোন অপরাধও করেননি। তিনি বৈধভাবে সেখান থাকছেন। অথচ এমনভাবে মালয়েশিয়া বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে খুঁজছে যেন সে বড় অপরাধী। আমরা জানতে পেরেছি রায়হানকে ধরার জন্য বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকেও হয়রানি করা হচ্ছে। এসব ঘটনা আমাদের আহত করেছে। আমরা রায়হানসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

মালয়েশিয়ার যেসব মানবাধিকার সংস্থা প্রবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং সেখানকার আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিষয়টি পর্বেক্ষণে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশপাশি মালয়েশিয়া সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আমরা নিপীড়নের ঘটনাগুলো তদন্ত করার আহবান জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনকে তৎপর হয়ে রায়হান কবিরের নিরাপত্তা নেওয়াসহ প্রবাসীদের অধিকার ও মরযাদা রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া অনুরোধ করছি।

যৌথ বিবৃতি দেয়া সংগঠনগুলো হলো, রামরু, ওয়ারবি, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), ওকাপ, বিএনএসকে, আইআইডি, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, বমসা, বাসুগ, ইনাফি, কর্মজীবী নারী, বিএনপিএস, ডেভকম, ইমা, আওয়াজ ফাউন্ডেশন, রাইটস যশোর, বিলস, বাস্তব, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন এবং মাইগ্রেশ নিউজ।

বার্তা বাজার / ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর