সিরাজগঞ্জে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরভানুডাঙ্গা ইছামতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও শিক্ষক নিয়োগের বিস্তর অভিযোগ ওঠেছে।

জানা যায়, এলাকাবাসীর উদ্যোগে ১৯৯৬ সালে চরভানুডাঙ্গা ইছামতি নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অভিযোগকারী বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক মো. কালাম হোসেন গত ১৪ আগষ্ট ২০১৯ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী বরাবরে চরভানুডাঙ্গা ইছামতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন বাতিল এবং ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন না দেয়ার জন্য অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে বলা হয়, ৩ আগষ্ট ২০১৯ইং- তারিখে ছাত্র অভিভাবক হিসেবে চরভানুডাঙ্গা ইছামতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রধান শিক্ষক সমেত অর্থনৈতিক লেনদেন করে ভোট গণনার সময় আমাকে কেন্দ্রে ঠুকতে না দিয়ে জোর পূর্বক নিজেদের মত ভোট গণনা করে অন্যান্য সদস্যদের বিজয়ী ঘোষনা করে। প্রধান শিক্ষক অর্থের বিনিময়ে প্রস্তাবিত সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ায় বর্তমানে উক্ত কমিটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় অস্থিরতা বিরাজ করছে।

পরবর্তী ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর দেবাশীষ রঞ্জন রায় জেলা শিক্ষা অফিসার সিরাজগঞ্জকে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক সুস্পষ্ট মতামত প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে ১৯ আগষ্ট ২০১৯ইং তারিখে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অভিভাবক ক্যাটাগরির প্রার্থী মো. কালাম হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক, মুকুল হোসেন, ছানোয়ার হোসেন, সেলিম রেজা ও আপাল মন্ডলের নামে কাজিপুর উপজেলা সহকারি জজ আদালতে মামলা (৭৩/২০১৯) দায়ের করে।

মামলায় উল্লেখ রয়েছে যে, নিজস্ব লোকদের বেআইনীভাবে বিদ্যালয়ের সৃষ্টপদে একজন সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার, শুন্যপদে একজন নিম্নমান সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর ও সৃষ্টপদে একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগে একাধিক বার পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ করে নিজ স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুলবুল ইসলাম। মামলাটির শুনানী ৩১ মার্চ ২০২০ইং- তারিখে হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ করোনার কারনে হয়নি।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই ২০) সরেজমিনে গেলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ফুটে ওঠার পরও জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক তথ্য যাচাই-বাছাই শেষ না হতেই গত ২৩ জুন ২০২০ইং- তারিখে স্থানীয় একটি পত্রিকায় কিভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে এ নিয়োগ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলার সর্বত্র আলোচনা-সমলোচনার ঝড় বইছে।

এ বিষয়ে একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বুলবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, আমি বৈধভাবে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তাছাড়া আদালত থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আরা বলেন, ঐ প্রতিষ্ঠানের জন্য জেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক এখনও ডিজি’র প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়নি। আর ডিজি’র প্রতিনিধি নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারবেনা। তারপরও বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানায় আমরা খতিয়ে দেখবো।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর