অন্ধকার জগৎ ছেড়ে আলোর পথে ৩ মাদক সম্রাজ্ঞী

জীবনের এক দীর্ঘ সময় এসব নারী ছিল ভয়ংকর এক মাদকের অন্ধকার জগতে। মাদক সম্রাজ্ঞী উপাধিও জুটেছিল তাদের। পুলিশের খাতায় তারা ছিলেন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী।

এরই ধারাবাহিকতায় জেলও খাটেন অনেকবার। কিন্তু এখন তাদের পরিচয় ভিন্ন। দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতাকে পুঁজি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তারা। ফিরেছেন সুস্থ, স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবনে। এ জীবনটাই যেন তাদের জন্য এখন হয়ে উঠেছে আলোর পথ। বৈধ পথে নিজেরাই ধরেছেন সংসারের হাল।

তাদের একজন হলেন চট্টগ্রাম নগরীর কতোয়ালি থানার পাথরঘাটার বাসিন্দা নুরুন্নাহার বেগম। তার বর্তমান বয়স ২১ বছর। মাঝে দীর্ঘ আট বছর জড়িয়ে ছিলেন ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ ভয়ংকর মাদক ব্যবসার সঙ্গে। মাদকের ব্যবসা করতে গিয়ে একাধিক মামলায় আসামি হয়ে কয়েকবার জেলও খাটেন তিনি।

অবশেষে ইচ্ছাশক্তির জোরে নিজেকে পাল্টিয়ে ফেলেন। পুলিশের সহায়তায় নিজের মধ্যে জন্ম দেন অন্য এক মানুষ সত্ত্বার। বছর খানেক হলো তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। বৈধভাবে আয় রোজগার করে সংসার চালাচ্ছেন।

বর্তমানে তিনি সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে নিজ বাসার সামনে সড়কের ধারে দিয়েছেন ছোট একটি দোকান। আর তিনটি রিকশা কিনে দিয়েছেন ভাড়া। তার এ উপার্জন দিয়েই স্বামী সন্তানসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার ভালোই চলছে।

নুরুন্নাহার বলেন,আমি তো এখানে চুরি করছি না, দোকানদারি করে কষ্ট করে খাচ্ছি।

নুরুন্নাহারের মতো পাখি বেগমও দীর্ঘ ১৬ বছর জড়িত ছিলেন মাদক ব্যবসার সঙ্গে। পাঁচবার জেলও খাটেন এ নারী। পাঁচ মামলা থেকে খালাস পেলেও এখনো তাকে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হয়।

নুরুন্নাহারের মতো পাখি বেগমও অন্ধকার জগৎ ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছেন স্বাভাবিক মানুষের জীবনে। নিজ ইচ্ছা শক্তির জোরে হয়ে উঠেছেন একজন স্বাবলম্বী নারী। অন্ধকার এ জগৎ থেকে ফিরে শুরু করেছেন প্রসাধন সামগ্রীর ব্যবসা। এ ব্যবসার আয় দিয়েই চলছে স্বামী সন্তানসহ তার পুরো সংসার।

পাখি বেগম বলেন, আমাদের ঘরে লোক আছে পাঁচজন। আমার দোকানে দৈনিক পাঁচ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। এ দিয়েই আমার সংসার চলে।

একই ধারাবাহিকতায় সুন্দর জীবনে ফিরতে দিন-রাত পরিশ্রম করছেন পাখিজা বেগম। তিনি ভুলে যেতে চান নিজের অপকর্মের ১০টি বছর। এখন তিনি নগরীতে সবজি বিক্রি করে হয়ে উঠেছেন স্বাবলম্বী। তার আয়েই চলে পুরো সংসার।

পাখিজা বেগম বলেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। ব্যবসা আস্তে আস্তে দাঁড় করাচ্ছি। নিজে পরিশ্রম করে চলছি,সংসার চালাচ্ছি।
ডেইলি বাংলাদেশ

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর