শিশু-কিশোরদের গড়া ‘মেন্টর মশাই’

শিশু-কিশোরদের প্ল্যাটফর্ম ‘মেন্টর মশাই’ নিয়ে ‘বার্তা বাজার’ এর সাথে গল্প করেছেন মো: শামীম আশরাফ।

বার্তা বাজার: কেন শিশু-কিশোরদের জন্য মেন্টর মশাই?
শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করছি আমি অনেক আগ থেকেই। অন্য একটা প্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করেছি। আমরা বড় হওয়ার পর বুঝতে পারি আমাদের ভুলগুলো কোথায় ছিলো। আমরা উৎসাহ পাইনি। গাইডলাইন পাইনি। পারিবারিক মূল্যবোধ। পারিবারিক ঝামেলা। ম্যানার। মেন্টাল প্রেসার৷ অসচেতনতা। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে ভুগি। উল্টা-পাল্টা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি৷

আমরা ছোটবেলায় অনেক কিছু পাইনি। সেটা বড় হওয়ার পর বুঝতে পারি৷ যখন আমরা বুঝতে পারি, তখন হয়তো ঘুরে দাড়ানো সম্ভব হয়না। এসব ভেবেই শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আমার। যেন শিশু-কিশোররা বেড়ে হয়ে উঠার পাশাপাশি একজন দক্ষ ও ভালো মানুষ হয়ে উঠে।

ছবি: সংগৃহীত

বার্তা বাজার: ‘মেন্টর মশাই’ এ কিভাবে কাজ করেন?
‘মেন্টর মশাই’ শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, সচেতনতামূলক এবং নিরাপদ একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা অফলাইন ও অনলাইনে কাজ করছি। অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছি যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, ওয়েবসাইট এব্ং অ্যাপ। অফলাইনে কাজ করছি বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে আমরা প্রোগ্রাম করছি।

যদিও আপাতত অনলাইনে কাজ হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতির কারণে৷ আমরা দেশ-বিদেশের অনেক শিশু-কিশোরদের আমাদের সাথে যুক্ত করেছি। মেন্টর মশাই এর একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে- এখানে যারা কন্টেন্ট তৈরি করছে সবাই শিশু-কিশোর। আমি চাচ্ছি- মেন্টর মশাই শিশু-কিশোরদের জন্য একটা মজার ও শিক্ষণীয় প্রতিষ্ঠান হবে শিশু-কিশোরদের মাধ্যমে। আমরা এসময়ে ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভ প্রোগ্রাম করে থাকি। দু’ধরণের অতিথি আমন্ত্রণ জানাই আমাদের লাইভে প্রোগ্রামে। বড় অতিথিদের জন্য ‘গল্প-জল্প’ এবং শিশু অতিথিদের জন্য ‘ইচ্ছের-গল্প’। এই লাইভ প্রোগ্রাম গুলো যারা উপস্থাপনা করে তারাও শিশু-কিশোর। আমরা ভিডিও টিউটোরিয়াল, নাটক, লিখালিখি, গল্প, কবিতা, আর্টসহ আরো কিছু মাধ্যমে শিশুদের সচেতনতা করছি এবং অনুপ্রাণিত করছি। আমাদের স্লোগান হচ্ছে- দেখবো, শিখবো, গড়বো। আমরা সকল শিশু-কিশোরদের জন্য।

বার্তা বাজার: করোনাভাইরাসের এসময়ে কি কি কাজ করেছেন?
আমরা এসময়ে শিশুদের মাস্ক বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ আরো কিছু সচেতনতা সামগ্রী বিতরণ করেছি।

ছবি: সংগৃহীত

বার্তা বাজার: কারা কন্টেন্ট তৈরি করছে আপনাদের টিমে?
আমাদের টিমের কয়েকজনের নাম বলছি- জাহিন, নার্সারিতে পড়ছে। জিলহান, ৪র্থ শ্রেনিতে পড়ছে। ইলিদা, নবম শ্রেণিতে পড়ছে। রাফিন, আবির , শিহাব, নজরুল এরা দশম শ্রেণিতে পড়ছে। মেহেদী, এলমি এরা এসএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে। সাজ্জাদুল, আরাফাত, ফরিদুল, লিবনী, হাসিবা এরা একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে।

আমাদের সাথে আরো যারা আছেন। নাসির, সৌরভ, সানজিদা, রুমি, রাসেল, সাদিয়া, মাহির, আসিফ, জামিল, চিশতি, রবিউল, হাদিউজ্জামান৷ সাকি ভাইসহ আরো কয়েকজন। উনারা একেকজন একেক বিষয়ে অভিজ্ঞ৷ শিশু-কিশোরদের পরামর্শ দিচ্ছেন এবং অনুপ্রাণিত করছেন৷

বার্তা বাজার: কি ধরণের প্রোজেক্ট আছে আপনাদের?
আমাদের একটা প্রজেক্ট আছে ‘বই দাও’ নামে। এই প্রজেক্ট হচ্ছে, আমাদের সমাজে অনেক অসহায় শিশু-কিশোর রয়েছে এবং অনেক শিশু-কিশোর আছে যারা বই পড়তে পছন্দ করে। কিন্তু তারা বই পাচ্ছেনা বা কিনার সামর্থ্য নেই। আমরা সেসব শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে বই উপহার দিই৷ অনেক শিশু-কিশোরদের বই দিয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ২০২২ সালে ১ লক্ষ শিশু-কিশোরদের বই দিবো। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে৷
.
মেন্টর মশাই ফেসবুক পেইজে অনলাইনে কুইজ প্রতিযোগিতা হচ্ছে। প্রতি পর্বের বিজয়ীকে বই উপহার দেয়া হয়। এতে শিশু-কিশোররা অনেক কিছু শিখতে পারে।

বার্তা বাজার: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
বার্তা বাজার কেও ধন্যবাদ।

 

বার্তা বাজার/পি.বি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর