শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৪ বছর আজ

আজ ৭ জুলাই, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া হামলার ৪ বছর। ২০১৬ সালের ওইদিনে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাতের পূর্বে মাঠে প্রবেশপথের সংযোগ সড়কে মুফতি মোহাম্মদ আলী জামে মসজিদের সামনের তল্লাশি চৌকিতে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেড, গুলি ও চাপাতির আঘাতে দু’জন পুলিশ কনস্টেবল, একজন গৃহবধু ও এক জঙ্গি নিহত হন।

সেদিনের স্বজন হারানোর দুঃসহ স্মৃতি আর দেশ কাঁপানো বীভৎস ঘটনা আজও তাড়িয়ে বেড়ায়। এ ধরণের নৃশংস ও বর্বরোচিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন কিশোরগঞ্জবাসী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যেই এ মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য আছে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনাটি সফলভাবে তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এ মামলার সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রত্যাশা করছি। আসামীগণ দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলায় জড়িত থাকায় তাদেরকে আদালতে হাজির করতে না পারায় বারবার মামলার সাক্ষী গ্রহণ পিছানো হয়। ফলে চা ল্যকর এ মামলাটির বিচার কাজ ব্যহত হচ্ছে।

এ সময় পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযানে গুরুতর আহত অবস্থায় শফিউল ইসলাম ডন নামে এক সশস্ত্র জঙ্গি এবং তানিম নামে স্থানীয় এক সন্দেহভাজন যুবক আটক হয়। আর এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় সর্বশেষ মোট ২৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়। এদের প্রায় সবাই হলি আর্টিজান রেস্তোরায় হামলারও আসামি। এসব আসামির মধ্যে ১৯ জনই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এ কারণে বেঁচে থাকা পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া সম্ভব হয়।

এ আসামিরা হলেন, কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজারদীঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার গান্ধারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদীপুর কাবলীপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।

সরকার এ ঘটনায় নিহত দুই পুলিশ সদস্যের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা এবং নিহত গৃহবধুর সন্তানকে ব্যাংকে চাকরি দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক জানান, ইতিমধ্যেই এ চা ল্যকর মামলাটির চার্জ গঠন সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আদালত সাক্ষীর জন্য প্রস্তুত। তবে এ মামলার আসামিদের প্রায় সবাই ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরায় হামলা মামলারও আসামি এবং এদের মধ্যে ১৯ জন ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

উল্লেখ্য গত ২০১৬ সনের ৭ জুলাই ঈদ-উল-ফিতরের দিন ঈদের জামাত শুরু হওয়ার পূর্বে শোলাকিয়া ঈদগাহের পশ্চিম দিকে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মসজিদের সামনে জঙ্গি হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ কনস্টেবল আনসারুল হক, জহিরুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ দেবনাথের স্ত্রী গৃহবধু ঝর্ণা রানি ভৌমিক ও হামলায় অংশ নেয়া আবির রহমান নামে এক জঙ্গির ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ও তানিম নামের এক জঙ্গী আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকের কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে র‌্যাব কিশোরগঞ্জে নিয়ে আসার পথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

বার্তা বাজার/এস.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর