সিঙ্গাইরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধার হাত ভেঙ্গে দিলো প্রতিপক্ষ

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বরুন বিবি(৬৫) নামে এক বৃদ্ধার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে সিঙ্গাইর পৌরসভার আজিমপুর গ্রামের রংয়ের বাজার এলাকায়। গত ৩০ জুন বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা যায়। ৬৫ বছর বয়সী আহত ওই বৃদ্ধাকে জাতীয় অর্থোপেডিক(পঙ্গু) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চলাচলের রাস্তা ও জমি নিয়ে সিঙ্গাইর পৌরসভার আজিমপুর গ্রামের রংয়ের বাজার মহল্লার বাসিন্দা মুক্তার হোসেন ও একই এলাকার মিঠু উদ্দিনের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। রাস্তার জায়গাটি মিঠু উদ্দিনের মালিকানাধীন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে স্থানীয় ভাবে একাধিকবার সালিশি বৈঠক হয়। সালিশি বৈঠকে চলাচলের সুবিধার্থে মুক্তার হোসেনের কিছু জমি মিঠু উদ্দিনকে দেওয়ার বিনিময়ে রাস্তাটি সচল রাখা হয়।

ভুক্তভোগী মুক্তার হোসেন বলেন, মিঠু উদ্দিনদের বাড়ির পিছনে আমার বাড়ী। প্রায় ৩০ বছর আগে সালিসী বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের জমি হইতে কিছু অংশ দেওয়ার শর্তে মিঠু উদ্দিনদের কিছু জমি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর পর থেকে সেই রাস্তা দিয়ে আমরা চলাচল করে আসছি। গত ৩০ জুন বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে মিঠু উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমার বৃদ্ধা মা বরুন বিবি রাস্তার উপর বেড়া দিতে বাধা দিলে মিঠু উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন লাঠিসোঠা নিয়ে তার উপর হামলা করে। এতে আমার মা’র বাম হাত ভেঙ্গে যায়। তখন মা’কে উদ্ধার করার জন্য আমার ছেলে ওমর ফারুক এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এসময় তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের বাসিন্দারা এগিয়ে গেলে হামলা কারীরা জীবননাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আমার মা বরুন বিবিকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেই। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখান থেকে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। আর ছেলে ওমর ফারুককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় মিঠু উদ্দিন, তার ছেলে রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মহিদুল ইসলামসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মুক্তার হোসেন।

এ ব্যাপারে জানতে মিঠু উদ্দিনের ছেলে মহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, রাস্তা বন্ধ করার অভিযোগটি সঠিক নয়। মুক্তার হোসেন আর আমরা পরস্পর আত্মীয়। ওদের সাথে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে কাউকে মারধর করা হয়নি। অনাকাঙ্খিত ভাবে রাগের বশত ঘটনাটি ঘটে গেছে। তাছাড়া ঘটনার পর মুক্তার ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও আমার মাকে মারধর করেছে। ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে মিমাংসার প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে সিঙ্গাইর থানার এসআই মো: মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মিঠু উদ্দিন ও তার তিন ছেলেসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগটি নথিভুক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর