৬০% মেস-বাসা ভাড়া মওকুফ চায় ববি শিক্ষার্থীরা

সারাদেশের অন্যান্য সাধারণ মানুষের মত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরাও কর্মহীন হয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের হাতে কোন টিউশনি বা খন্ডকালীন চাকরি না থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাছাড়া নিয়মিত মেস মালিকদের চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন মেসে থাকা শিার্থীরা। এমতাবস্থায়, শিক্ষার্থীরা ৬০ শতাংশ মেস ভাড়া মওকুফ চায়।

একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই নিজের খরচ নিজে জোগাড় করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। এর মধ্যে তিনটি হলে আবাসিক সুবিধা পান মাত্র ২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই হলে সিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে মেসে থাকতে হয়। এই সঙ্কটকালীন সময়ে নানামুখী সমস্যায় পড়ে তারা মেস ভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না। মেস মালিকদের নিয়মিত হুমকি ও চাপ প্রয়োগের সম্মুখীন হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবী, সম্পূর্ণ না হলেও অন্তত মূল ভাড়ার কিছু অংশ মওকুফের ব্যবস্থা করলে কিছুটা সহনীয় হয় শিক্ষার্থীদের জন্য।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুনিয়া বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সকলেই ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিন পার করছে। এই প্রতিকূল অবস্থাতেও মেস এর ভাড়া নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে আমাদের। আমদের বেশিরভাগ মানুষই নিম্ন মধ্যবিত্ত। কৃষিকাজ বা দৈনন্দিন কাজ করে জীবন চালান। খুব কষ্ট করে ছেলে মেয়ের খরচ বহন করেন। এখন সকল আয়ের পথও বন্ধ। কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন সবাই। এমতাবস্থায় মেস ভাড়া দেওয়া আমাদের দ্বারা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৬০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ করার দাবি জানাচ্ছি।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো: সাগর বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রী দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসে। আর এমন পরিবার থেকে প্রতি মাসে মেস ভাড়া দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।যেখানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। তাই এমতবস্থায় আমরা মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানাচ্ছি।

এই ব্যাপারে ববি প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি বাড়িওয়ালাদের মানবিক আচরণ করা উচিত। তিনি আরও জানান, কোন শিক্ষার্থী হুমকি বা চাপ প্রয়োগের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবে।

ঘটনার অন্যদিকও আছে। অনেক মেস মালিকেরই আয়ের একমাত্র উৎস মেস ব্যাবসা। একদিকে ব্যাংকের লোনের চাপ, অন্যদিকে আর্থিক সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই ভাড়া দিতে পারছেন না। সব মিলিয়ে তাদের সংসার সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

বার্তা বাজার / ডি.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর