‘চল্লিশা’ প্রকল্পের শ্রমিকদের মজুরী মেরে খেলেন ইউপি চেয়ারম্যান!

সরকারের গৃহীত অতিদরিদ্রেদের কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করা শ্রমিকদের মজুরীর লাখ লাখ তাদেরকে না দিয়ে নিজের পকেটে ঢুকানোর অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মুছার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (২ জুন) জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়।

ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করা ৫ শ্রমিক এই লিখিত অভিযোগটি জানান। অভিযোগকারী ৫ শ্রমিক হলেন- জাফরপুর গ্রামের হেলন মিয়ার ছেলে আলাউদ্দিন, ফুল মিয়ার ছেলে আক্তার, আবদুল জব্বারের ছেলে রেজাউল করিম, হাবিবুর রহমানের ছেলে আবুল হোসেন এবং সুলেমান মিয়ার ছেলে এরশাদ।

অভিযোগে বলা হয়, হতদরিদ্রদের সহায়তায় সরকার টাকা দেবে বলে তাদের প্রত্যেকের নামে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ইব্রাহিমপুর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় হিসাব খোলা হয়। গত ৬ই এপ্রিল তাদের প্রত্যেকের হিসেবে ৮ হাজার টাকা করে জমা হয়। যার মেসেজ তাদের মোবাইলে আসে।

এর পরদিন সকাল বেলা চেয়ারম্যান আবু মুছা ব্যাংকের এক লোকসহ শ্রমিকদের বাড়ী এসে ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে কয়েকদিনের মাঝে টাকা পাওয়ার কথা বলে চলে যান। ওইদিনই তাদের মোবাইলে ম্যাসেজ আসে যে তাদের টাকা উত্তোলন হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কেউ টাকা পায়নি। টাকা চাইতে গেলে চেয়ারম্যান তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয়।

ভোক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, এই কর্মসূচীতে কাজ করা ৯৪ জনের কেউই টাকা পাননি। ৪ বছর ধরে চেয়ারম্যান এইভাবে তাদের টাকা আত্মসাত করে খাচ্ছেন।

তবে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান আবু মূছা। তিনি বলেন, লেবারের টাকা লেবাররাই নিচ্ছে। লেবার কাজ করছে। তাদের বাদ দিয়ে টাকা উঠানোর সুযোগ নেই। উদ্দেশ্যমূলক এই অভিযোগ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ইব্রাহিমপুর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার কর্মকর্তা মারুফ হোসাইন কর্মসূচির টাকা চেয়ারম্যান ও নিকটবর্তীদের হাতে দেয়া হয়। ৯৪ জন হতদরিদ্রের জন্য মোট ৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা বরাদ্দ পেমেন্ট করেন তারা।

নবীনগর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান- এই কর্মসূচির একজন শ্রমিক প্রতিদিন ২০০ টাকা করে পান। এ থেকে ২৫ টাকা করে সঞ্চয় জমা রাখা হয়। সেই হিসাবে ৪০ দিনে একজনের মোট পাওনা ৮ হাজার টাকা হলেও সঞ্চয়ের এক হাজার টাকা বাদে তারা ৭ হাজার টাকা পান। নভেম্বর ও ডিসেম্বর এবং এপ্রিল ও মে মাসে এই কর্মসূচি হয় বলে জানান তিনি।

বার্তাবাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর