বাইকের ভিতরে ‘ফণী’, উৎকন্ঠিত বাইক মালিক!

প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে তাড়া খেয়ে বাইকের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছিল ‘ফণী’। যেমন দশাসই চেহারা। তেমনই তার ক্ষিপ্রতা। ক্ষিপ্র গতিতে বাইকের ভিতরে ঢুকে যাওয়ার পর কিছুতেই বেরোতে চায় না। ‘ফণী’কে তাড়াতে লোকজন ডাকা হল। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় ‘ওস্তাদ’-এর কাছে নিয়ে গিয়ে বের করা হল তাকে। শেষে হাফ ছেড়ে বাঁচলেন বাইকের মালিক ও তাঁর পরিবার।

ব্যাপারটা কী? আসলে রবিবার কাটোয়া শহরের কলেজ মাঠপাড়ায় একটি মোটর বাইকের ভিতরে একটি দাঁড়াশ সাপ ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘিরেই কার্যত হুলুস্থুল কাণ্ড বেঁধে যায় এলাকায়। বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র পর তো সাপ বাংলাদেশি ভাষায় ‘ফণী’ নামেই খ্যাতি পাচ্ছে কি না। তাই সেই ফণী বিদায় নেওয়ার পরও কাটোয়ায় ফণী আতঙ্কই ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথমে যদিও স্থানীয়রা ভেবেছিলেন নির্ঘাৎ বিষধর কোনও সাপ হবে। পরে বোঝা যায় চেহারায় দশাসই হলেও সেটি নেহাত শান্ত নির্বিষ দাঁড়াশ সাপ। স্থানীয় কয়েকজন যুবক ওই সাপ-সহ বাইকটি নিয়ে যান প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে একটি গ্যারেজে। শেষমেশ এক মেকানিক বাইকের যন্ত্রাংশ খুলে সাপটি বের করার ব্যবস্থা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার কলেজ মাঠপাড়ার বাসিন্দা রাকেশ ঘোষাল নামে এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর শখের বাইকে এদিন সকালে হঠাৎ আশ্রয় নেয় প্রায় ৭ ফুট দৈঘ্যের একটি সাপ। রাকেশের পাশেই তাঁর কয়েকজন আত্মীয়ের বাড়ি। রাকেশ বলেন, “সাপটি পাশে জ্যাঠার বাড়িতে প্রথম দেখা গিয়েছিল। জ্যাঠামশাই সাপটি তাড়াতেই দ্রুতগতিতে আমাদের বাড়িতে চলে আসে। তারপর আমার বাইকের সামনে হেডলাইটের ভিতরদিকে ঢুকে পড়ে। আর বের করতে পারিনি।” স্থানীয় সূত্রে খবর, সাপটি তার বাইকের ভিতরে সেঁধিয়ে যেতেই রাকেশ পাড়ার বন্ধুবান্ধবদের ডাকেন। জনা পাঁচেক বন্ধু রাকেশের বাড়িতে চলে আসেন। তাঁরাও আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করেন সাপটিকে বাইক থেকে আলাদা করার। রাকেশের বন্ধু আকাশ মল্লিক, বিশ্বজিৎ রায়দের কথায়, “আমরা সাপটিকে যতই লেজ ধরে টেনে বের করার চেষ্টা করি ততই সাপটি শ্বাস ধরে ফুলতে থাকে। ফলে আটকেই থাকে। শেষে গ্যারেজের মিস্ত্রির কাছে যাই।”

রাকেশের বাড়ি থেকে বাইকটিকে ঠেলে মেরামতকারীর কাছে নিয়ে যান তাঁর বন্ধুবান্ধবরা। একজন সাপের লেজটি ধরে থাকে। কাটোয়া থানা রোডে একটি গ্যারেজে নিয়ে গেলে কালু পণ্ডিত ও তাঁর সহকারী মিস্ত্রি ভোলা মিলে বাইকের সামনের কিছুটা অংশ খুলে দেয়। তখন সাপটি বের করা সম্ভব হয়। তবে রাকেশ বলেন, “প্রথম থেকেই আমরা কেউ সাপটিকে মারতে চাইনি। যাতে আঘাত না লাগে তার চেষ্টা করে গিয়েছিলাম। তাই গ্যারেজে নিয়ে আসা হয়।” এদিন তিন ঘণ্টা পর সাপটি বের করে কাছাকাছি একটি পুকুরপাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর