এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আশার আলো

এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নয়া দিশা। ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দাবি, অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ড্রাগের সাহায্যে কোনও ব্যক্তির এইচআইভি সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে যৌন সংসর্গের মাধ্যমে তাঁর সমকামী সঙ্গীর সংক্রমণের আশঙ্কা প্রায় থাকে না।

ইউরোপজুড়ে এক হাজার সমকামী যুগলের উপর পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল চিকিৎসা চলাকালীন কোনও ব্যক্তি যদি সুস্থ সঙ্গীর সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন, তাতে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আট বছর ধরে চালানো এই পরীক্ষায় ১৫ জন পুরুষ এইচআইভি সংক্রমণের শিকার হন। তবে তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি নেওয়া সঙ্গীর থেকে তাঁদের এই সংক্রমণ হয়নি, বরং অন্য কোনও সঙ্গীর থেকে তা ছড়িয়েছে।

অসমকামী যুগলদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য, প্রমাণ হয়েছে আগের সমীক্ষায়। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি নেওয়া অ্যালেক্স স্প্যারোহকের ঘটনাটাই দেখা যাক। ৩৪ বছরের এই যুবক ১০ বছর ধরে এইডস আক্রান্ত। ২০০৯ সালের নভেম্বরে তাঁর এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পড়ে। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি শুরু হয় অ্যালেক্সের। দিনে চারটি করে ওষুধ। কয়েক মাস পরে যখন দেখা গেল অ্যালেক্সের শরীরে ভাইরাসের প্রকোপ অনেকটাই কমেছে, ওষুধের সংখ্যা কমানো হল। আপাতত, সাড়ে ছ’ বছর ধরে একটি সম্পর্কে রয়েছেন অ্যালেক্স। তবে তাঁর সঙ্গিনীর মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায়নি। অ্যালেক্সের কথায়, ‘চিকিৎসকরাও আশ্বাস দিলেও যৌন মিলনের সময় আমাদের দু’জনেরই ভয় থাকত। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণার সাফল্য আমাদের সেই ভয়কে অনেকটা কমিয়ে দেবে।’

গবেষণাপত্রটির লেখক, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক অ্যালিসন রজারের কথায়, ‘আমাদের গবেষণা প্রমাণ করেছে, সাপ্রেসিভ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপিতে থাকা কোনও ব্যক্তির থেকে তাঁর সমকামী সঙ্গীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা শূন্য।’

২০১৭-এর তথ্য বলছে, পৃথিবীজুড়ে কমপক্ষে ৪ কোটি মানুষ এইচআইভি সংক্রমণের শিকার। তাঁদের মধ্যে ২ কোটি ১৭ লক্ষ মানুষের অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল চিকিৎসা চলছে। ব্রিটেনে এইচআইভি সংক্রামিতের সংখ্যা ১,০১,৬০০, যাঁদের মধ্যে ৭,৮০০ জনের এইচআইভি ধরাই পড়েনি। ইউএনসি ইনস্টিটিউটের মাইরন এস কোহেনের কথায়, ‘এইচআইভি সংক্রমণের পরীক্ষা করা বা তার যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে ভয়, সামাজিক লজ্জা, সমকামী সম্পর্ক নিয়ে ভয়ের মতো বিষয়ও থাকে। একেবারের প্রথম দিকে এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পড়ার সম্ভাবনা।

সূত্র: এই সময়।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর