দেলদুয়ারে বেগুনি পাতার ধান বাতাসে মাঠে দোলছে

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে বেগুনি পাতার ধান চাষে করে সফল হয়েছেন কৃষক। সে কারনে বেগুনি পাতার ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে অনকেরই। উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক ভিন্ন জাতের বেগুনি পাতার চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে অনেক কৃষকেরাই। সত্যি যেন চারিদিকে সবুজ পাতার ধানের মাঝে বেগুনি পাতার রংয়ের ভিন্নতা দেখতে পাওয়াটা এক মনোমুগ্ধকর ব্যাপার। এ ছাড়া অল্প সময়ে আশানুরূপ ফলন হওয়ায় অনেকেই বেগুনি পাতার ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার বারপাখিয়া গ্রামের এক কৃষক প্রথমে টেলিভিশনে বেগুনি পাতার ধান চাষের খবর দেখেন। এতে ওই কৃষক আগ্রহ হয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রাজিব মল্লিকের সাথে আলোচনা করেন। এরপর উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় গাজীপুর জেলা থেকে বেগুনি পাতার ওই ধান বীজ সংগ্রহ করা হয়। এতে ওই কৃষক সহ তিন জন মিলে ওই ধান চাষ করে উপজেলায় ব্যাপকভাবে সারা জাগিয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এখনো ধানটির সঠিক কোন জাত নির্ধারণ করা হয়নি।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ধানটির সঠিক কোন জাত নেই। তবে বেগুনি পাতার ধান হিসাবেই পরিচিত হয়েছে ধানটি।

উপজেলায় এই প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে বেগুনি পাতার ধান চাষ করা হয়েছে। তবে ধান কাটার পর হিসাব করে দেখা গেছে বেগুনি পাতার ধানের উৎপাদন হার হেক্টর প্রতি ৭ টন হয়েছে। অপরদিকে ২৯ জাতের ধান হেক্টরে সাড়ে ৭ টন হয়ে থাকে। এতে দেখা যায় বেগুনি পাতার ধান আর ২৯ ধান উৎপাদন হার প্রায় একই রকম হয়। তবে বেগুনি পাতার ধানে পুষ্টিমান বেশি রয়েছে।

এছাড়া তুলনামূলক অন্য ধানের চেয়ে কম খরচে এবং কম সময়ে চাষ করা হয়ে থাকে বেগুনি পাতার এ ধান। তবে উপজেলায় মাত্র তিনজন কৃষক ভিন্ন জাতের এ ধান চাষ করেছেন। তারা হলেন বারপাখিয়া গ্রামের আব্দুল আলীম মিয়া, শুকুর মিয়া ও মিন্টু মিয়া ।

বারপাখিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আলীম জানান, সে ৮ শতাংশ জমিতে বেগুনি পাতার ধান চাষ করেছে। তবে কম সময়ে ও কম খরচেই আশানুরূপ ধান ঘরে তুলতে পেরে খুশি হয়েছেন।

একই গ্রামের কৃষক মিন্টু মিয়া জানান, চারিদিকে সবুজ পাতার ধান ক্ষেতের মাঝে বেগুনি পাতার ধান ক্ষেত অনেক সুন্দর দেখায়। বেগুনি পাতার ধান চাষে সময় কম লাগে বলেও জানান তিনি ।

দেলদুয়ার সদর ইউনিয়নের উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজিব মল্লিক জানান, দেলদুয়ার বারপাখিয়া গ্রামে এক কৃষক টেলিভিশনে বেগুনি পাতার ধান চাষের খবর দেখে আগ্রহ প্রকাশ করায় বেগুনি পাতার ধান বীজ সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন। তবে বেগুনি পাতার ধানে আশানুরূপ সাফল্য পাওয়া গেছে ।

এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শোয়েব মাহমুদ জানান, বুধবার ২০ মে উপজেলায় প্রথম বেগুনি পাতার ধান কাটা হলো। এতে দেখা গেছে বেগুনি পাতার ধানের উৎপাদন হার হেক্টর প্রতি প্রায় ৭ টন হয়েছে। বেগুনি রং দেখে বেগুনি পাতার ধান চাষে কৃষকের মাঝে ব্যাপকভাবে সারা পাওয়া গেছে। এছাড়া আগামী বছর ব্যাপকভাবে বেগুনি পাতার ধান চাষের জন্য প্রস্ততি রয়েছে বলেও জানান তিনি ।

বার্তা বাজার/এম.সি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর