ইন্সপাইরেশান – আরিফ শাহরিয়ার

শুনলাম তোমার গুছানো সংসার,আঁচলে একগোছা চাবির ভাড়,দামি গাড়ি,কর্পোরেট হাসবেন্ড,জীবনে কি চাই আর!সুখ খুঁজে সুখী হয়েছো তুমি,তোমার অসুখে অসুস্থ আমি, প্রায় মরেই যাচ্ছি। বিপিন পার্ক আর তোমায় প্রিয় নয়।তোমার প্রিয় নেভাডা,দার্জিলিং,প্যারিস।শ্যামচাঁদ প্রসাদের গলি তোমার প্রিয় নয় আর!অথচ ক’বছর আগেও এরকম সস্থা গলিতেই চা সিগরেটে মেতে থাকতে। ঝগরা করতে, মারামারি করে শার্টের বোতাম ছিড়ে দিতে! গোলাপ পছন্দের ফুল ছিলো। কখনো স্মৃতির বাসার ছাদ থেকে, কখনো সখনো দোকান থেকে কিনে রাখতাম। কি খুশিটাই না হতে।জরিয়ে ধরতে চুমু খেতে ;অধরে,কপালে, হাতে। এখনো ফিলিংসটা রয়ে গেছে জানো।
গোলাপ কি এখনো পছন্দের তালিকায় আছে? কেউ এনে দেয় এখনো?

তোমার লাল রঙ্গের গাড়িটা যেদিন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের পাশে এসে থেমে থেমে এগিয়ে যাচ্ছিলো-আমি সেখানেই ছিলাম।চায়ের স্টলে। সেই চা স্টল যেখানে বসে কবিতা পড়ে শুনাতাম। সেই সুমন মামা, এখনো চা বানায়।চিনি ছাড়া চা। আমি তো রোজ আসি।সরবতের মতো করে চা খাই। এক কাপের পর আরেক কাপ।চিনি ছাড়া চা। রং চা।দুধ চা।মালাই চা। কি যে ভালো লাগে! আসোনা শুধু তুমিটা। আচ্ছা বিয়ের পর কি টং দোকানে বসে চা খাওয়া বারন?বিয়ের পর কি কবিতা ভালো লাগে না?বিয়ের পর কি হাঁটতে ভালো লাগে না?ঘন্টার পর ঘন্টা?বিয়ে হলেই চট করে মানুষ বড় হয়ে যায়? ছেলে মানুষি একটাও থাকে না? অনেক দায়িত্ব এসে যায়? একটা উড়ন্ত মন কিভাবে এতো অল্প সময়ে এতো পরিবর্তন হয়? মন কি মনের দাস? নাকি মন বহুরঙ্গা? আমি তো পারি না। তোমার বিয়ের পর অন্তত দু বছর চেষ্ঠা করেও নিজেকে এতটুকু পরিবর্তন করতে পারি নি। যেমন ছিলাম তেমনই আছি। বেকডেটেড।কি লাভ নিজেকে আপগ্রেট, আপডেট করে যেখানে তুমিটা নেই!

ভালো থেকো, সুখে থেকো। আমাকে ভুলতে চেয়ে ভুলে যেও।

থাকগে এগুলা। ওসব আগের কথা। এখন কথা হলো –

শুধু প্রার্থনা করি,মুছে যেন যায় তোমার অধরে, কপালে মাখানো আমার চুমোর কালিমা।
আমিও যে আজ আর তোমার নেই।হয়ে গেছি অন্য স্বপ্নের,অন্য আকাশের।
যে স্মৃতির বাসার গোলাপ ডেলিবারি হতো তোমার হাতে সে স্মৃতি আজ আমার। এক প্রেমিকা এক দেশ এক জাতিতে কে কবে বিশ্বাস করেছে?একের পর দুই স্বাভাবিক নিয়মেই আসে। এসেছেও।
ইশ্বর স্বয়ং যদি আমাকে দু চারখানা প্রেমিকা দেন আমি অস্বীকার করবার কে বলো?ফেলে দেবারই বা কে আমি? আর নতুন হাত, নতুন চোখ, নতুন ঠোঁট, নতুন চুলের ঘ্রান আজন্ম সৃষ্টির প্রিয়। সবই স্রষ্টার কারসাজি।যতই বলি বা কবিতা লিখি তুমি অনেকের একজন, সাধারনের বাইরে অসাধারন ছিলে -আসলে সব স্রষ্টার সৃষ্টি,সব এক সব সমান।

তোমায় ইশ্বর যে মায়াবী চোখ দিয়েছেন আমার স্মৃতিকেও দিয়েছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থেকে কাটিয়ে দিই। কি দারুন, কি মায়াবী!

ঘূর্নিঝড় যে গাছকে উপড়ে ফেলেছে তার তলায় আমি নতুন গাছ রোপন করবো না কেনো? বলবে?

আজ কবিতা ঘরে অন্য কারো আনাগোনা।কবিতার পর নতুন কবিতা এসে নতুন কাব্যের সূচনা করে, প্রচ্ছদ লিখে দেয়।হাতের উপর হাত মনে করিয়ে দেয় অসাম্প্রদায়িকতা।

চুমুর উপর চুমুর ছাপ ভুলিয়ে দেয়, মুছে দেয় পুরোনো স্মৃতির বিষ।

নতুনকে ধরে বাঁচতে শিখায়।

আরিফ শাহরিয়ার
লেখক ও শিক্ষার্থী

বার্তা বাজার/এস.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর