সিরাজদিখানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান

পাঁচ বছর পূর্বে চর পানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষনা করা হলেও কোমলমতি শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পড়া-লেখা করে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে। শিক্ষার্থীদের পাঠ দানের জন্য অতিরিক্ত কোন কক্ষ না থাকায় শিক্ষকরাও ২৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন এই ভবনেই। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে ক্লাস রুমে। তখন সকলের মনেই ছাদ ধ্বসে পড়ার শঙ্কা থাকলেও জীবনের ঝুকি নিয়েই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের এই চর পানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

চর পানিয়া সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের এই ভবনটি স্থাপিত হয় ১৯৯২/৯৩সালে।মাত্র ২৭ বছরের মাথায় এই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। বিগত ৫ বছর পূর্বে প্রকৌশলীগণ জরিপ করে বিদ্যালয় ভবটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষনা করে। অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ এ ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা ও অভিবাবকরা। বিদ্যালয় ভবনটি দেখলে যেকেউই আঁতকে উঠবেন। ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা উঠে গেছে। ছাদের পলেস্তারা উঠে গিয়ে ঢালাইয়ের সুরকি পড়েছে। মাঝে মধ্যে ছাদ থেকে পলেস্তারা ও সুরকি খসে পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। ভবনের পিলার ও ছাদের ঢালায়ের সুরকি খসে গিয়ে রড বেড়িয়ে পড়েছে। ভবনটি হয়ে পড়েছে সেঁতসেঁতে। যেকোন সময় এটি ধ্বসে পড়ে প্রাণহানির কারণ হতে পারে। বর্ষার দিনে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে শ্রেনী কক্ষে পানিতে ভরে যায়। বৃষ্টিতে ভিজে যায় বইপত্র ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় অধিক বেশী ঝুকিতে থাকে শিক্ষার্থীদের প্রাণ। ভারী বর্ষণ হলে আতঙ্কে থাকে অভিবাবকগণ। কারণ ভারী বর্ষণের ফলে ছাদ ভিজে নরম হয়ে যে কোন সময় এটি ধসে পড়ে প্রিয় সন্তানের প্রানটি কেড়ে নিতে পারে। এ ঝুকির মধ্যে বিদ্যালয় ভবনটি থাকলেও পাঁচ বছর আগে ঝুকিপূর্ণ করা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এলাকাবসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে প্রশাসন তথা সরকারের উপর।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, একটু বৃষ্টি হলেই শ্রেনী কক্ষগুলোর ছাদ চুঁইয়ে চুঁইয়ে রুমের ভেতর পানি পড়ে। অথচ এর মধ্যেই তাদের ক্লাস করতে হয়। অভিভাবকরা জানান, তাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ঝুকিপূর্ণ জেনেও তারা সন্তানকে শিক্ষা দিতে স্কুলে পাঠাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ নূর জামান জানান যেকোন সময় ভবনটি মাটিতে ধসে পড়ে যেতে পারে বলে প্রকৌশলী গন এই ভবনটিকে ৫ বছর আগে ঝুকিপূর্ন ভবন বলে ঘোষনা দিয়ে যাবার পরেও এই বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ না থাকায় শিক্ষকগন ভয়ে ভয়ে এই ভবনের মধ্যে ক্লাশ করে যাচ্ছেন।

চর পানিয়া সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা আক্তার জানান, বিদ্যালয়টি বর্তমানে খুবই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে হয়। চারটি কক্ষের মধ্যে একটি পুরোপুরি পরিত্যক্ত বাকি তিনটিতে জরাজীর্ণ আশংকা জেনেও উপায়ন্তর নাপেয়ে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। দ্রুত এটি মেরামত করা না হলে যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জানমালের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সিরাজদিখান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: বেলায়েত হোসেন জানান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস জরিপের পর ভবনটি ঝুকিপূর্ণে ঘোষনা করে। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাতে এটা হয় সেজন্য আমি চেষ্টা করছি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর