ক্যাম্পাসের দিনগুলি

বন্ধুত্ব, ভালবাসা, শিক্ষক শব্দগুলো একই সূত্রে গাঁথা। ভালবাসার ক্যাম্পাসের মুখরিত শৈশবগুলোর স্মৃতি আজও অমলীন ও মধুর বটে। ক্যাম্পাসের দিনগুলির কথা মনে করলে অনেক স্মৃতিবিজড়িত সময়ের কথাগুলো মনের আয়নায় ভেসে ওঠে। কতই না মধুর ছিল সেই সময়টা। বন্ধুদের সঙ্গে নদীর পাড়ে বিকেলে ঘুরতে যাওয়া, চায়না বাধে মামার দোকানের লাল চা, মাঠের ফুটবল খেলা আজ যেন সবই স্মৃতি।

দীর্ঘ ১০ বছরের স্কুল জীবনের পড়াশোনা শেষ করে প্রবেশ করেছিলাম স্বপ্নের মেরিন ক্যাম্পাসে। যেখানে যৌবনাদীপ্ত তরুণ তরুণীরা পায় অগ্রিম সাগরে ভাসার এক অনাবিল প্রশান্তি। সমমনাদের নিয়ে গঠিত হয় বন্ধুত্ব ও ভালবাসার এক নিবিড় বন্ধন। দেশের ভিন্ন জায়গা থেকে আগত ভিন্ন মানসিকতা, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ধর্মের মানুষগুলো হয়ে ওঠে এক আত্নার একই প্রাণ। শিপবিল্ডিং টেকনোলজির নাজমুল হাসান বললেন এমনটাই। তার মতে এখানেই ঘটে মেধার বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিভার বাতিঘর। সাগরে যাওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি। এই বন্ধুত্ব জাতি, ধর্ম,বর্ণ সবার উধ্বে। শেখায় সহমর্মিতা ও বিনয়ী হতে। বন্ধু ছাড়া ক্যাম্পাস যেন এক মরুভূমি। প্রয়োজনে বন্ধুরাই অবতীর্ণ হয় মা, বাবা, ভাইয়ের ভূমিকায়।

আর এই বন্ধুত্বের বন্ধনকে মজবুত করতে বন্ধুত্বের চার বছর পূর্তিতে ক্যাম্পাসের সর্বশেষ দিন সকালে একসাথে মিলিত হয় আইএমটি সিরাজগঞ্জ এর শিপবিল্ডিং টেকনোলজির ২য় ব্যাচের (চতুর্থ বর্ষ) শিক্ষার্থীরা। হলরুম থেকে শুরু করে ক্লাস ফাঁকি, প্রক্সি, গানের আসর, মামার চায়ের দোকানের আড্ডা, দলবেঁধে ঘুরাঘুরি, রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে হলের ছাদে গান গাওয়া, চাঁদা তুলে জন্মদিন পালন করার একেকটি অধ্যায় যেন মিশে গেছে রক্তের সাথে। এসব স্মৃতিকে মনের গহীনে গেঁথে রাখতে চতুর্থ বর্ষ পূর্তিতে এই আয়োজন তাদের। ‘‘ রেখেছি তোদের হৃদয়ে, দেখা হবে বিজয়ে ’’ স্লোগানের এই উৎসব শিক্ষার্থীদের কোলাহলে শান্তির নীড় খ্যাত মেরিন ক্যাম্পাস সেজেছিল নতুন এক অপরুপ সাজে।

bty

সকাল নয় টায় আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে চতুর্থ বর্ষপূর্তিতে উৎযাপনের সূচনা করেন শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে বেরিয়ে ঢাকা – সিরাজগঞ্জ হাইওয়ে সড়কের প্রধান মিলনস্থল থেকে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এছাড়াও ফানুস উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,বৃক্ষরোপণ, পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ, মুভি উৎসব, ক্যাম্পাস পরিষ্কার ও ডাস্টবিন প্রতিষ্ঠা করেন তারা। মেরিন টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাশিম বিল্লাহ মিম বলেন ‘‘ সাদার ওপর খয়েরি রংয়ের টি শার্ট গায়ে সারা ক্যাম্পাস পাখির মতো ঘুরে বেরিয়েছি। আমাদের দেহ ভিন্ন হলেও প্রাণ এক। টি শার্টে লেখা বন্ধুত্বের জন্য স্মৃতিকথা,গান-বাজনা আর নানারকম হইহুল্লোড় এর মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বের এই দিনটি পালন করলাম। সারাদিন চললো অবিরত রঙ্গের খেলা।

বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো চার বছরের বর্ণিল স্মৃতিগুলো এক দুই কথায় লিপিবদ্ধ হয়ে গেল স্মৃতির ভান্ডারে। সেই টি শার্ট এখন স্মৃতির এলবাম। তাইতো তারুণ্যের কবি রুদ্র মাহমুদ বলেছেন ‘‘ পাসনে কষ্ট বিদায়ে, রেখেছি তোদের হৃদয়ে, দেখা হবে বিজয়ে ’’।

লেখক-
মোঃ রশিদুল আলম,
সাবেক শিক্ষার্থী আইএমটি, সিরাজগঞ্জ
২য় ব্যাচ, শিপবিল্ডিং টেকনোলজি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর