একটি স্নিগ্ধ বিকেলের গল্প

দীর্ঘ তিন মাস হল ভ্রমণ গল্প, ছোট গল্প কিংবা কবিতা লেখা থেকে দূরে আছি। লিখালিখি আমার শখের স্থান। এক শখের স্থান থেকে অন্য শখের স্থানে পারি দিলাম অর্থাৎ দীর্ঘ তিন মাস শিক্ষাকতায় আত্মনিয়োগ করেছি। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সময়ের বেড়াজালে আটকে লেখালেখি সম্ভব হয়নি।

হঠাৎ করে বাংলাদেশেও জাতীয় দুর্যোগ দেখা দিল অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে আমরা নিস্তব্ধ নীরবতায় সময় অতিবাহিত করছি। তাই আমারও কোন ক্লাস নেই। হাতে অফুরন্ত। নামাজ, বই পড়ে আর ঘুমের মধ্যে সময় অতিবাহিত করছি। অলস সময় পার করে বিরক্ত বোধ করছি। তাই মনের সতেজতা ফিরিয়ে আনতে বাসা থেকে বের হলাম গ্রাম বাংলার মেঠো পথ ধরে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করে সফরসঙ্গী প্রিয় ছাত্র শান্ত।

গ্রামবাংলার চিরচেনা আকাঁবাকাঁ মেঠোপথে হেঠে চলেছি। চোখের সামনে ভেসে বেড়াচ্ছে দুরের ছোট ছোট গ্রাম গুলো। মায়া মমতা মাখা সবুজ ঘেরা গ্রামের পরতে পরতে শৈশবের স্মৃতি। তাই মনে পরে গেল কবি গুরুর কবিতার কিছু লাইনঃ

অবারিত মাঠ, গগন ললাট চুমে তব পদ-ধূলি, ছায়া-সুনিবিড় শাস্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি।

চগল্পে গল্পে গ্রামের আঁকাবাঁকা পথে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে হেঠে চলেছি। রাস্তার পাশেই রাখালদের দলবেঁধে গরু চরানো, হাটুসমান পানিতে পাতিহাঁসের হাক-ডাক, পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ, চৈত্র মাসের কাঠপোড়া রোদে নদী গুলো শুকিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এসবই গ্রামীণ সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি। শুকনো নদী গুলো এখন ধান চাষের আবাদি জমি।

লেখকের গ্রামের পাশের নদীতে হাঁসের জলকেলি

নদীর দুই পার্শ্বে সারি সারি গাছ। দুই চোখ ভরে দেখলেই মন প্রাণ ভরে যায়। মনে হবে আজ প্রকৃতি সেজেছে আপনাকে বরণ করার জন্য। বাতাসের তালে তালে সবুজ গাছের পাতা দুলে। শীতল বাতাসের স্পর্শে ক্লান্তি দূর করে সজীবতা ফিরিয়ে আনে।

আমরা যখন দিরুয়াইল গ্রামে পৌছাই তখন ছোট ছোট শিশুদের মাছ ধরার দৃশ্য আমাকে টেনে নিয়ে যায় শৈশবের স্মৃতিতে। ততক্ষনে বন্ধু আওলাদের সাথে দেখা হয়ে গেল। খোশগল্প চলতে থাকলো।

এখানে আকাশ ফিরে যায়, ফিরে যায়

পশ্চিম আকাশেও সূর্য হেলে পড়েছে। সবুজ ঘাসে শিশু-কিশোরদের হৈ-চৈ, গোল্লাছুট খেলার দৃশ্য মনে প্রশান্তি এনে দেয়।

পশ্চিম আকাশে সূর্যটা লজ্জাবতী নারীর ন্যায় আমাদেরকে বিদায় জানালো। গোধূলী লগ্নে পাখিগুলো নীল আকাশে উড়ে যাচ্ছে আর আমাদের বিদায় জানাচ্ছে। তাই আমিও পাখিদের মত সন্ধ্যায় সন্ধ্যয় রওনা দিলাম নিজ নীড়ে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর