শ্যামনগর বনবিভাগের নৌকার মাঝি নবাব আলী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৩

সুন্দরবনের নদীতে বিষটোপ দিয়ে মাছ ধরতে আপত্তি করায় বনবিভাগের ট্রলারের মাঝি নবাব আলীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার রাতে শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহষ্পতিবার তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গোপালগঞ্জ জেলার শেলখোলা উপজেলার মোকছেদপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে আজিজুল ইসলাম, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের ইসলাম গাজীর ছেলে আব্দুর রহিম ও তার ছেলে মতিউর রহমান।

শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, তার বাবা নবাব আলী (৬৫) বনবিভাগের কৈখালি স্টেশনের নৌকা ও ট্রলার মাঝি ছিল। সুন্দরবন সংলগ্ন সীমান্তবর্তী মাদার নদীতে একটি বিশেষ মহল বিষটোপ দিয়ে মাছ শিকার করতো।

এভাবে মাছ না ধরার জন্য তার বাবা নবাব আলী তাদেরকে নিষেধ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মুন্সিগঞ্জের আব্দুর রহিম, তার ছেলে মতিউরসহ কয়েকজন গোপালগঞ্জের আজিজুল ইসলামকে কিলার হিসেবে ভাড়া করে।

একপর্যায়ে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সন্ধায় বাড়ি থেকে তার বাবাকে ডেকে নিয়ে যায় রহিম ও মতিউর। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বনবিভাগের ঘাটের পল্টনের উপর ফেলে রেখে চলে যায়।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি অপমত্যু মামলা করেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

মৃত্যুর আড়াই মাস পর ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে তার বাবাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে মঙ্গলবার জানতে পেরে তিনি বাদি হয়ে আব্দুর রহিম, মতিউরসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বুধবার রাতে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে আব্দুর রহিম, মতিউর ও আজিজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন।

এ সময় তারা জনসমক্ষে নবাব আলীকে কিভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তা স্বীকার করে। হত্যার নেপথ্যে আরো কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য জানার জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে বৃহষ্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ছুটি চলকালিন বৃহষ্পতিবার দায়িত্ব থাকা বিচারিক হাকিম বিলাস কুমার মন্ডল রিমান্ড শুনানীর জন্য দিন নির্ধারণ করেননি। রিমান্ড শুনানীর দিন পরবরর্তীতে জাননো হবে। তাদেরকে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

কেএ/বার্তাবাজার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর