দেশের জন্য উদ্বিগ্ন কাদের

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেশের খবর জানতে দেয়া হচ্ছে না। তিনি যেন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন এবং কোন কারণে উত্তেজিত না হন এজন্যই দেশের খবর থেকে তাকে আড়াল করা হয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ও অধ্যাপক আবু নাসার রিজভী এবং কাদেরের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তারা জানিয়েছেন, ওবায়দুল কাদের এখন আগের চেয়ে অনেক সুস্থ রয়েছেন। তিনি এখন কেবিনে অবস্থান করছেন। নিজে নিজে হাঁটাচলা করছেন। হালকা খাওয়া দাওয়া করছেন। তবে তার যে বাইপাস সার্জারি হবে, সেটা এখন পর্যন্ত তাকে জানানো হয়নি। এ ব্যাপারে ডা. রিজভী বলেছেন, বাইপাস সার্জারির কথা শুনলে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে পারেন। এর ফলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে। এ জন্য তাকে জানানো হয়নি। তাছাড়া তিনি আরও জানান, এখনও বাইপাসের দিন তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি।

ডা. রিজভী জানান, ওবায়দুল কাদেরের স্নায়বিক কোন সমস্যা ধরা পড়েনি। তিনি সবকিছু ঠিকঠাক মনে করছেন। তিনি যখন কথা বলতে শুরু করেন, তখন তিনি প্রথমে জিজ্ঞাসা করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কেমন আছেন?’ এরপর তিনি জানতে চান, দেশে এতো ভালো ভালো হাসপাতাল থাকতে তাকে কেন সিঙ্গাপুর আনা হয়েছে? তখন তার স্ত্রী তাকে বলেন যে, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে সিঙ্গাপুর আনা হয়েছে। তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই চিকিৎসার খরচ কিন্তু আমি, বহন করবো।’ ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী তাকে জানান যে, কে চিকিৎসার খরচ বহন করবে না করবে সেটি বড় বিষয় নয়। সেটি পরবর্তীতে দেখা যাবে।

জানা গেছে, ওবায়দুল কাদের জানতে চেয়েছেন, ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল কী? এ ব্যাপারে ডা. রিজভী বাংলা বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনের ফল তাকে জানানো হয়নি। আমরা চাইছি তিনি যেন দেশের রাজনৈতিক কোন খবর বা তথ্য নিয়ে উত্তেজিত না হন। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, কোন অবস্থাতেই তাকে এমন কোন তথ্য দেয়া যাবে না যাতে তিনি উত্তেজিত হতে পারেন বা মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন। এ জন্য তাকে সংবাদপত্রও দেয়া হচ্ছে না। ডা. রিজভী জানান, ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে কোন অস্থিরতা নাই। এজন্য দেশের তথ্য জানার জন্য তিনি কোন চাপ প্রয়োগও করছেন না।

আজ সকালে তিনি ডা. রিজভীকে বলেছেন, লেখালেখির জন্য তাকে কাগজ কলম দেয়া যায় কি না। তখন ডা. রিজভী বলেছেন, এখন তার লেখালেখির দরকার নেই। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হলে তারপর লেখালেখি করলে হবে। কবে নাগাদ তিনি সুস্থ হবেন এব্যাপারে ওবায়দুল কাদের জানতে চেয়েছেন। তখন তার স্ত্রী তাকে বলেছেন, খুব শিগগিরই তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসবেন।

ওবায়দুল কাদের আজ জানতে চান, পদ্মাসেতুর কাজের কী অবস্থা এবং কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে? এ ব্যাপারে তাকে বলা হয়েছে, সব কাজ ঠিকমতো চলছে। দেশ ভালো আছে। সবাই আপনার জন্য দোয়া করছে যেন আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন।

ওবায়দুল কাদের হাঁটাচলা করলেও এখনও অনেক দুর্বল রয়েছেন এবং খুব আস্তে তিনি কথাবার্তা বলছেন। চিকিৎসকরা তাকে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। খুব শিগগিরই তার বাইপাস সার্জারির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ডা. রিজভী জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ সকালে ওবায়দুল কাদের অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হয়। সেখানে তার এনজিওগ্রাম শেষে হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্য থেকে একটি ব্লক অপসারণ করে রিং পরানো হয়। পরের দিন ৪ মার্চ তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়।

— বাংলা ইনসাইডার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর