স্কুল ছাত্রী সেতুর আত্মহত্যা! কারণ হতে পারে ধর্ষণ

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সেতু মন্ডল (১৬) নামে এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় নিহত সেতু মন্ডলের মা বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় মামলা করেছেন। নিহত সেতু মন্ডল উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী গোপাল মন্ডলের মেয়ে। সে নিজ গ্রামের পাশ্ববর্তী ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার আগেই প্রধান আসামী সোহেলকে তার নিজ বাড়ী নবাবগঞ্জ এলাকার দৌলতপুর থেকে গত বুধরার রাতেই আটক করে। সোহেলের বাবার নাম ফালান মিয়া।

সেতু মন্ডলের চাচা পবিত্র মন্ডল জানান, গত বুধবার সকালে বসত-ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয় স্কুল ছাত্রী। তাৎক্ষনিক পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করলে ওই দিন বিকেলে মারা যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের জন্য স্কুল ছাত্রীর মরদেহ মিডফোর্ট হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত ৯ই এপ্রিল সেতু মন্ডল স্কুলের যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাসায় ফিরেনি। দুই দিন পর ১১ এপ্রিল ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গোলামবাজার পুলিশ ফাঁড়ি তাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ তার বাড়িতে খবর দিলে পরিবারের লোকজন গোলামবাজার ফাঁড়ি থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে ফেরার ৫ দিন পর বুধবার সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গোলামবাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক কবিরুল ইসলাম জানান, ১১ এপ্রিল গোলামবাজার এলাকায় এক যুবকের সঙ্গে ওই স্কুল ছাত্রীকে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। এতে পুলিশ যুবক ও স্কুল ছাত্রীকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয় ও স্কুল ছাত্রীকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ৫ দিন সেতু মন্ডল আত্মহত্যা করে । এ ঘটনায় সেতু মন্ডলের মা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত সোহেলকে প্রধান আসামী এবং অজ্ঞাত আরো ২জনকে আসামীকে করে অপহরন,ধর্ষনসহ ৪টি ধারা দিয়ে মামলা দায়ের করেন । এদিকে সেতু মন্ডলের আত্মহননের খবরে গ্রামটিতে শোকের ছায় নেমে আসে। তার শিক্ষালয়েও শোক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

সিরাজদিখান থানার ওসি মো. ফরিদউদ্দিন মামলার বাদী রেখা মন্ডলের বরাত দিয়ে জানান, সেতু মন্ডল উদ্ধারের সময় অনেকটা অচেতন ছিল। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তার মাকে জানিয়েছে- সোহেল নামের এক যুবক তাকে সেখানে নিয়ে যায়। পর দিন একটি স্থানে ফেলে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পুলিশের ধারনা মেয়েটি ধর্ষণের স্বীকার হয়েছিল এবং কোন নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়। মেয়েটি কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থার পরই আত্মহনণের পথ বেছে নেয়।ওসি সেতু মন্ডলের মা রেখা মন্ডলের বরাদ দিয়ে বলেন, মান সম্মানের ভয়ে মুখ খুলেননি। হাসপাতালে পর্যন্ত নেননি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর