মহামারী থেকে বাঁচার জন্য যে দোয়া পড়বেন

আমরা অনেকেই অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ি। সামান্য বিপদ দিশেহারা হয়ে পড়ি। রোগ, অসুস্থতা, অর্থনৈতিক সমস্যা, পরিবারিক বিরোধ এটি মানবজীবনের একটি স্বাভাবিক সমস্যা। কিন্তু এসব সমস্যা যখন খুব বেশি প্রখর হয়ে ওঠে আমরা অনেকেই ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলি। অথচ মহান আল্লাহ তাআলা এ সময়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেছেন।

যে কোন বিপদে বান্দা যখন আল্লাহকে অন্তর দিয়ে ডাকেন, মহান রাব্বুল আলামীন সাথে সাথে সাড়া দেন। যে ব্যাক্তি তার কাছে দোয়া করে, তাদের প্রতি তিনি খুশি হন। যারা আল্লাহর কাছে দোয়া করে না, আল্লাহ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আর আমার বান্দা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে; আমি তো কাছেই আছি। আমি দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)

অন্য একটি সূরায় আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের রবকে ডাকো বিনীতভাবে ও নীরবে। নিশ্চয়ই তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৫)

আল্লাহর চেয়ে উত্তম দাতা ও সাহায্যকারী আর কেউ নেই। একমাত্র তিনিই বান্দার সব অভাব-অভিযোগ পূরণ করতে পারেন।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে তাঁর দয়া ও রহমত চাও। কেননা আল্লাহ তায়ালা চাইলে তিনি খুশি হন।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ৩৫৭১)

প্রার্থনা হচ্ছে একাগ্রচিত্তে চাওয়া এবং পাওয়ার প্রক্রিয়ায় নিজেকে বিলীন করে দেওয়া। প্রার্থনায় অবিচল বিশ্বাস ও সেই সঙ্গে নিরলস পরিশ্রম করলেই বুঝতে হবে প্রার্থনার সঙ্গে প্রার্থনাকারী একাকার হয়ে গেছেন।

মহান স্রষ্টা প্রার্থনা পছন্দ করেন এবং তা কবুল করেন। তিনি আপনার প্রর্থনার ফল সঙ্গে সঙ্গে বা যথোপযুক্ত সময়ে বা পরকালে দিতে পারেন।

আমরা বলতে পারি- ‘হে করুণাময়! দুঃখীর দুঃখ দূর করা, অসুস্থকে নিরাময় করা, মজলুমের কষ্ট মোচন করা, অভাবকে প্রাচুর্যে রূপাস্তরিত করা, মানুষের জীবনকে মমতায় ভরিয়ে দেয়া আর পরিপূর্ণভাবে নিজেকে চেনার সঠিক পথে আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাও।’

‘মহাজীবনের সহজ স্বাভাবিক ধারায় মহামানবের পথে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি আমাকে দাও। আমার মেধাকে পুরোপুরি বিকশিত কর। আমার ভেতর সুপ্ত অনন্য মানুষকে- ইনসানে কামেলকে জাগিয়ে দাও।’

আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইতে পারি এভাবে- ‘হো আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল! তুমি ক্ষমা করতে ভালবাসো। আমায় ক্ষমা কর।’

‘প্রভু হে! আমি নিজেই নিজের ওপর জুলুম করেছি, অন্যায় করেছি, পাপ করেছি। তুমি ছাড়া আমায় ক্ষমা করার কেউ নেই। তোমার ক্ষমা ও করুণাই শুধু আমাকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে পারে। তুমি আমার সকল অপরাধ ক্ষমা কর। আমায় করুণা কর। তোমার রহমত ও বরকতের ছায়ায় আশ্রয় দাও। সৃষ্টির সেবায় আমৃত্যু মেধাকে কাজে লাগানোর তওফিক দাও। প্রশান্তি ও আনন্দে জীবন ভরিয়ে দাও।’

অসুস্থ হলে আমরা বলতে পারি- ‘হে মহানিরাময়কারী! মহামহান! করুণানিধান! রোগ-ব্যাধি থেকে আমার দেহ-মনকে পুরোপুরি মুক্ত কর। আমাকে দাও এক সুস্থ প্রাণোচ্ছল পরিপূর্ণ জীবন। হে নিরাময়কারী! আমাকে পুরোপুরি নিরাময় কর। হুয়াশ্ শাফী! হুয়াশ্ শাফী! হুয়াশ্ শাফী!’

যে কোন মহামারী থেকে বাঁচতে পড়ুন- ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই শ্বেত, উস্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সমস্ত দুরারোগ্য ব্যাধি হতে।’

প্রার্থনা যে শুধু মুসলিমদের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতে পারেন একাগ্রচিত্তে। তিনি চাইলে যেকোন মানুষকেই মুক্তি দিতে পারেন। তাই আসুন বিপদে ধৈর্য্য হারা না হয়ে, প্রার্থনা করি একাগ্রচিত্তে নিজের সৃষ্টিকর্তার কাছে।

বার্তা বাজার / ডব্লিও.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর