বাস থেকে নামিয়ে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

বগুড়ায় প্রকাশ্যে বাস থেকে নামিয়ে এক বিএনপিকর্মীকে ছুরিকাঘাতে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া সদরের মহাস্থানের কাছে চণ্ডিহারা খোলাগাছির মোড়ের লিচুবাগানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিএনপি কর্মীর নামআপেল মাহমুদ (৩৫)।

এ সময় নিহত আপেলের বড় ভাই বিএনপি কর্মী আল মামুনের (৩৮) দুই হাতের আঙুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। আহত অবস্থায় মামুনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত আপেল মাহমুদ ও আহত আল মামুন বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামের আবদুল মান্নান কসাইয়ের ছেলে। মামুন গোকুল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও আপেল ওই ইউনিয়ন বিএনপির সক্রিয় কর্মী।

বগুড়া সদর থানার তদন্ত পরিদর্শক রেজাউল করিম রেজা বলেন, দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক কোন্দলের জের ধরে ছাগল বিক্রির নামে দুই ভাইকে ডেকে এনে এ হামলা চালিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গোকুলে স্বেচ্ছাসেবক দলকর্মী সনি হত্যার জের ধরে এ প্রতিশোধ নেয়া হয়।

স্থানীয়রা জানায়, দুই ভাই গরু-ছাগল কেনার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে মহাস্থানহাটে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা ছাগল বিক্রির নামে তাদের ফোন করে চণ্ডিহারা খোলাগাছির মোড়ের কাছে আসতে বলেন।

সকাল ৯টার দিকে তাদের বহনকারী বাস সেখানে পৌঁছলে গোকুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান ও তার সহযোগীরা দুই ভাই আপেল ও মামুনকে নামিয়ে পাশেই একটি লিচুবাগানে নিয়ে যায়।

তারা আপেলের বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত এবং মামুনের হাতে কোপ দিয়ে আঙুলগুলো (প্রায় সব) বিচ্ছিন্ন করে ফেলে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আপেলের মৃত্যু হয়। গুরুতর অবস্থায় মামুনকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গোকুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুমন আহমেদ বিপুল বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রুপিং চলে আসছে।

গত ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গোকুল এলাকায় মিজানের সহযোগী সনিকে হত্যা করা হয়। তখন মিজানও গুরুতর আহত হয়েছিলেন।

মামুন ওই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। সনি হত্যার পর থেকে দুগ্রুপের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ছিলো ।

গত বছরের ২১ অক্টোবর মামুন আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শহরের আটাপাড়ায় তার ওপর হামলার চেষ্টা করেছিল মিজান ও তার অনুসারীরা।

বগুড়ার ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবদুল আজিজ মণ্ডল জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আল মামুনের দুই হাতের আঙুলগুলো প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

সদর থানার তদন্ত পরিদর্শক রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘আপেলের মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে হামলাকারীদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’

বার্তা বাজার / ডব্লিও.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর