গার্মেন্টসে নামাজ বাধ্যতামূলক নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক

অফিস চলাকালীন প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে জোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত সবাইকে।

‘মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড’ নামের ওই কারখানায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই নির্দেশনা জারির পর বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। পরে এ নির্দেশনার ব্যাখ্যা দেন কারখানার পরিচালক (অপারেশন) মেসবাহ ফারুকী।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নোটিশে লেখা রয়েছে, এই তিন ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাঞ্চ মেশিনে পাঞ্চ করতে হবে। যদি কোনো স্টাফ মাসে সাত ওয়াক্ত পাঞ্চ করে নামাজ না পড়েন, তবে সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির বেতন থেকে একদিনের সমপরিমাণ হাজিরা কর্তন করা হবে।

এমন নির্দেশনা কেন দেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যায় কারখানার পরিচালক (অপারেশন) মেসবাহ ফারুকী বলেন, ‘সবাই আমরা নামাজ পড়ি। আমরা ইসলাম ধর্মের অনুসারী, আমাদের নামাজ পড়া ফরজ। এখানে মুসলমান যারা আছে তারা সবাই নামাজ পড়ে। কিন্তু তারা নামাজ পড়ে বিক্ষিপ্তভাবে।’

কারখানার পরিচালক জানান, কর্মীদের মধ্যে মতভেদ-দূরত্ব কমানোর একটি উপায় হিসেবে কারখানায় নামাজ বাধ্যতামূলক করার এই সিদ্ধান্ত। মেসবাহ ফারুকী বলেন, ‘আমাদের এখানে বিভিন্ন মতভেদের লোক আছে। এখানে একটা টিম হিসেবে কাজ করতে হয়।

এখানে ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে নিটিং সেক্টরের হয়তো একটা সমস্যা থাকে। একেকজন একেকজনের ওপর দোষারোপ সারা দিন চলতেই থাকে। তো আমি এটার সমাধান হিসেবে চিন্তা করলাম তাদের যদি একসঙ্গে বসানো যায়, একসঙ্গে কিছু সময় যদি তারা কাটায়, তাদের মধ্যে দূরত্বটা কমবে।’

ফারুকী তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বাস্থ্যগত ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘সারা দিন বসে বসে কাজ করায় কোলেস্টেরল বাড়ছে, ডায়াবেটিস বাড়ছে। মসজিদ চারতলায় হওয়াতে কিছুটা ব্যায়ামও হচ্ছে।’

নোটিশে এক দিনের বেতন কাটার বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ পর্যন্ত কারও বেতন কাটা হয়নি।’ মেসবাহ ফারুকী জানান, বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, তারা অন্য কোনো ধর্মাবলম্বীকে নামাজ পড়তে বাধ্য করছেন না। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘এ ধরনের নির্দেশনা বাংলাদেশের সংবিধান বিরোধী।’ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

রপ্তানির জন্য সরকারের দেওয়া জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জাপান, রাশিয়া ও আমেরিকা অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে তাদের ব্যবসা। ২০১৬ সালে তাদের রপ্তানি আয় ছিল ৯০ মিলিয়ন ডলার। মূলত গেঞ্জি কাপড়ের নানা ডিজাইনের পোশাক তৈরি হয় এখানে। প্রতি মাসে তাদের রপ্তানি ১৮ লাখ পিস পোশাক।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর