পাগলা মসজিদের দানবাক্স বোঝাই দেশি-বিদেশি কোটি টাকা

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের পাঁচটি দানবাক্স থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ দেড় কোটি টাকা পাওয়া গেছে। সাড়ে তিন মাস পর আজ শনিবার মসজিদের দানবাক্স খুলে মিলেছে নগদ ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা। যাতে ছিলো স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারসহ অনেক বিদেশি মুদ্রা। যা গতবার থেকে ৬৬ হাজার ১০০ টাকা কম।

এর আগে সর্বশেষ গত ২৬ অক্টোবর সিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন এক কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। বিপুল পরিমাণ দানের এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।

তিন মাস ১৯ দিন পর শনিবার দানবাক্স খুলে সকাল থেকে বিকেলে পর্যন্ত চলে টাকা গণনা। প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয় পাগলা মসজিদের দানবাক্স হিসেবে ব্যবহৃত পাঁচটি লোহার সিন্দুক। মসজিদটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসন বলছেন, এসব অর্থ এ মসজিদসহ জেলার সব মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।

মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন বলছেন, এখানে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়- এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করে থাকেন। মানত কিংবা দান-খয়রাত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিম নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে।

তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। আর এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ’ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

জেলা প্রশাসককে (ডিসি) সভাপতি করে প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনকে নিয়ে গঠিত কমিটি এ মসজিদটির ব্যবস্থাপনা ও দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। টাকা গণনা কাজ তদারকি করেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পাগলা মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ পারভেজ, সদস্য সাইফুল হক মোল্লা দুলু, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফজলে রাব্বি, মাহামুদুল হাসান, মো. উবায়দুর রহমান সাহেল ও শফিকুল ইসলাম, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দিন ভূঞা প্রমুখ।

পাগলা মসজিদে টাকা গণনার এই এলাহি কাণ্ড নিজ চোখে দেখতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণী-পেশার অনেক মানুষ মসজিদে ছুটে আসেন।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর