বিনা বিচারে একযুগ কারাগারে!

বরগুনা জেলা কারাগারে ১২ বছর যাবৎ বরগুনার পাথরঘাট উপজেলার উত্তর কাঠালতলী গ্রামের আবু হানিফা (৫৫) নামের এক ব্যাক্তি আটক রয়েছে বলে
তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। আবু হানিফ এর মা আয়না বেগম (৮৫) সন্তানের জন্য পথে পথে ঘুরছে আর চোখের জল ফেলে সন্তানের মুক্তির দাবী জানাচ্ছে।

সরেজমিনে উত্তর কাঠালতলী গ্রামে আবু হানিফাদের বাড়ি গিয়ে তার মা ও আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, হানিফা আয়না বেগমের মেঝো ছেলে। হানিফার প্রথম স্ত্রী নি:সন্তান পিয়ারা বেগম ১৯৮০ সালে বিয়ের ০৮ মাস পরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।ঐ সময় হানিফা কাজের জন্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছিল। স্ত্রীর আত্মহত্যার দুই দিন পরে বাড়িতে আসে।

হানিফা জানায়, তার স্ত্রী মানসিকভাবে অনেকটা অসুস্থ্য ছিলেন। প্রায়ই রাতে কাউকে না বলে বাড়ির বাইরে চলে যেত। অনেক খোঁজা খুঁজি করে তাকে ফিরিয়ে আনা হতো। পুলিশের হয়রানির সে বাড়ি থেকে চলে যায়।

তাকে না পেয়ে পুলিশ সন্দেহ জনকভাবে হানিফার মা আয়না বেগমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। দীর্ঘ্য পাঁচ বছর কারাবাসের পরে আয়না বেগম মুক্তি পায়। হানিফার দাবী তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছে। সে তার মুক্তির ব্যাপারে মানবাধিকার সংগঠনে সহযোগীতা কামনা করেন। হানিফা বলেন, কি আমার অপরাধ আমি আজও জানতে পারলাম না।

রাষ্ট্র কেন আমাকে আমার মত নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আটক রেখেছে জানতে চাই। এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানা পুলিশ বাদী হয়ে (জিআর ৪২২/৮০) ধারা ৩০২/৩৪ এ একটি মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মজিবুর রহমান আদালতে দেওয়া তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন ১৯৮২ সন হতে আসামী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার নথীটি নিজ ফাইল হওয়ায় খুঁজিয়া পাওয়া যায় নি। জিআর রেজিষ্ট্রারে ওয়ারেন্টের বিষয় উল্লেখ থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ মামলায় ২৭.০১.২০০৬ ইং তারিখ পুলিশ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুসারে তাকে গ্রেফতার করে উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত পাথরঘাটায় সোপর্দ করলে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। হানিফার মা আয়না বেগম অভিযোগ করেন, তার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ। পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত না করে তাকে এবং তার ছেলেকে হত্যা মামলায় জড়িয়েছে।পাথরঘাটা থানা ও আদালতে ঘুরে এই মামলার কোন নীথপত্র পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন, হানিফার মা আয়না বেগম। বর্তমানে পথে পথে ভিক্ষে করে তার জীবন চলছে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীসহ সরকারের নিকট তার ছেলের মুক্তির দাবী জানান।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর