করোনাভাইরাসের ‘ভয়াবহতা’ গোপন করছে চীন?

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা চীন গোপন করছে বলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। চীন সরকারের দাবি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখনো দুই হাজার ছাড়ায়নি। তবে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আলোচনা তৈরি হয় অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া মাস্ক পরিহিত এক নারীর ভিডিও ফুটেজকে কেন্দ্র করে। নিজেকে উহান শহরের চিকিৎসাকর্মী দাবি করে তিনি বলেছেন, দেশটিতে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, সরকারি পদক্ষেপের অপর্যাপ্ততা নিয়ে ওঠা সমালোচনা দমন করা হচ্ছে। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস ইতিমধ্যেই রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ দিকে আজ রোববার সকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া জানায়, এই ভাইরাসের কবলে পড়ে প্রানহানি হয়েছে ৫৬ জন। শনাক্তকৃত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৮৫ জন। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, আরও দুই হাজার ৬৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।

গতকাল শনিবার প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং পরিস্থিতিকে গুরুতর আখ্যা দিয়েছেন। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে নাম প্রকাশ না করা ওই নারী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের শুরু যেখানে আমি সেখানে আছি। সত্য প্রকাশে হাজির হয়েছি আমি। এই মুহূর্তে উহানসহ হুবেই প্রদেশে এমনকি চীনেই ৯০ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।’

নার্স পরিচয় দেওয়া ওই নারী ভিডিওতে বলেন, ‘এখন এই ভিডিওটি যারা দেখছেন তাদের প্রত্যেককেই বলতে চাই বাইরে যাবেন না। উৎসব করবেন না। বাইরে খাবেন না। বছরে একবার আমরা চীনা নববর্ষ উদযাপন করি। এখন যদি আপনি নিরাপদ থাকেন তাহলে আগামী বছর আবারও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।’

ওই নারী বলেন, ‘সরকার কী বলছে তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দিয়ে আপনাদের বলছি। সবাই দয়া করে উহানে মাস্ক, চশমা এবং কাপড় পাঠান। বাস্তবতার সাপেক্ষে আমাদের সম্পদ পর্যাপ্ত নয়।’

সমালোচকদের দাবি, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসের বিপদ সম্পর্কে সরকারকে সচেতন করতে পারতেন। তাদের হয় আটক করা হয়েছে নয়তো তাদের গবেষণা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা চীনের শাসন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন না।

২০০২-০৩ সালে সার্স (সেভার একিউট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম) সংক্রমণের সময়েও চীন সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে। ওই সময়ে আক্রান্তদের খবর কেবল বহির্বিশ্বের কাছেই নয় বরং নিজ দেশের জনগণের কাছেও গোপন করে চীন সরকার।

রোগে আক্রান্তের খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ নিষিদ্ধ করা হয়। এর পরিবর্তে জনগণকে ভীত না হতে আশ্বস্ত করে সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া বিবৃতি প্রকাশ করতে বলা হয়।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর