বিএনপি আন্দোলন-নির্বাচনে না পারলেও নালিশ করতে জানে: কাদের

আন্দোলন আর নির্বাচনে না পারলেও বিএনপি শুধু নালিশ করতে জানে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন আর আন্দোলনে পারেন না, এখন শুধু নালিশ আর নালিশ। নির্বাচন কমিশনে আপনাদের (বিএনপি) একজন স্থায়ী প্রতিনিধি আছে, আপনাদের এই নালিশের কোনো বাস্তবতা নেই।’

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মোটরচালক লীগের সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা বলছে, সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সরকারি সংস্থাকে বাধ্য করে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ দল (বিএনপি) আন্দোলনেও ফেল, নির্বাচনেও ফেল। আন্দোলনে ফেল করলে নির্বাচনেও ফেল করে। বিএনপি ফেলের মধ্যেই আছে। তাদের ভাগ্যে বিজয় কবে আসবে জানি না।’

তিনি বলেন, ‘নেতিবাচক রাজনীতির কারণে মানুষ আর তাদের সঙ্গে নেই। শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অর্জন বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির ওপর সংকটের যে কালো ছায় ফেলেছে, সে থেকে বিএনপির নিস্তারের কোনো উপায় নেই। নির্বাচন নিয়ে আপনাদের যত নালিশ যত অভিযোগ। নির্বাচন আর আন্দোলনে পারেন না, এখন শুধু নালিশ আর নালিশ। নির্বাচন কমিশনে আপনাদের একজন স্থায়ী প্রতিনিধি আছে, আপনাদের এই নালিশের কোনো বাস্তবতা নেই।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বিদেশে যাওয়ার সময় সরকারের সকল সংস্থার প্রধানদের বলেছেন, এই নির্বাচনে আমি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ, কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি চাই না। কোনো এজেন্সি কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ যেন না করে। সেই বিষয়ে ক্লিয়ার মেসেজ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এখানে সংশয়ের কোন কারণ নেই। শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে জনগণ যা চায় তাই হবে। এত কাজ করে জনগণ যদি ভোট না দেয় জবরদস্তি করে জনসমর্থন আদায় করে ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।’

কাদের বলেন, ‘আমাদের পার্টিকেও একই মেসেজ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, ঘরে ঘরে যাও, জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে। কাজেই, আমরা সরকারে পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করব না। এটা পরিষ্কার। আগেও বলেছি এখনো স্পষ্টভাবে বলছি। আসলে নির্বাচনে তাদের অবস্থা কী হবে সেটা তারা বুঝে গেছেন, তারা বুঝে গেছেন এই নির্বাচনের বিজয়ের বিষয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। বিজয়ী হতে পারবে না বলেই তারা আজকে বিভিন্ন ধরনের নালিশ করার পথ বেছে নিয়েছে। তারা যতই অপপ্রচারই করুক দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই চায়, আওয়ামী লীগকেই চায়।’

বাকশাল নিয়ে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সংকটময় মুহূর্তে জাতির পিতা সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে একটা দল করেছিলেন। যার নাম হচ্ছে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ সংক্ষেপে যাকে বাকশাল বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক যুক্ত হয়েছে, এটাই অনেকের গাত্র দাহের কারণ। মওদুদ সাহেব আপনি কি ভুলে গেছেন, এই দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সাহেবের নামটাও ছিল।’

তিনি বলেন, ‘ভুলে গেছেন, এটা কোনো একদলীয় ব্যবস্থা নয়। এটা ছিল জাতীয় দল, কৃষক শ্রমিক মেহনতি, শোষিত মানুষের পক্ষের একটা সুশৃঙ্খল জাতীয় দল। এটা ছিল, একটা সাময়িক ব্যবস্থা। অপরাধ একটাই কৃষক আর শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনর্বিন্যাস করেছেন, এটাই তাদের গাত্র দাহ। এটা আগেও ছিল, এখনো আছে।’ বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশে আবার রক্তস্রোত বইবে বলেও তিনি দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘অপরাজনীতির হোতা বিএনপি নামক অপশক্তি যেন আর ক্ষমতায় না আসতে না পারে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই অপশক্তি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক, এরাই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির সূচনা করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক, জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার এবং এদের নেতিবাচক রাজনীতিকে এ দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।

বাংলাদেশে এই অপশক্তি যদি আবার ক্ষমতায় আসতে পারে দেশ আবারও অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। বিএনপি নামক অপশক্তি যদি আবারও ক্ষমতায় আসে এই দেশে রক্তস্রোত বইয়ে দেবে। এরা যদি আবারও ক্ষমতায় আসে এ দেশ বিশ্বে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসে চ্যাম্পিয়ন হবে।’

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর