‘ফানুস’ মঞ্চ-সিনেমা

সমসাময়িক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে, সমাধান আর বাস্তবতা মাথায় রেখেই কাজ করেন সমাজের অগ্রগামী কিছু মানুষ।

সমাজসংস্কারক, নির্দেশক, চিত্রশিল্পী, লেখক তথা সকল শিল্পী, এমনকি কিছু ব্যবসায়ী।তাদের চিন্তা কে তারা মানুষের কাছে পৌছানোর সব ধরনের চেষ্টা করেন, আরও উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে।

আমি পেশাগত জীবনে অভিনেতা। তাই আমি আমার চিন্তাকে, আমার চারপাশের অনু সঙ্গের মাধ্যমে প্রকাশ করবার চেষ্টা করি। যে যার ভাষার মাধ্যমকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তার একান্ত ব্যাক্তিগত চিন্তাকে সার্বজনীন করবার জন্য। আমিও আমার চিন্তাকে সার্বজনীন করবার চেষ্টাতেই পথ-নাটক কিংবা মঞ্চনাটক করে থাকি।

ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃতিগত ভাবেই কিছু মানুষ কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসেন পৃথিবীতে। সমাজের কোনায় কোনায় কিংবা পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে আলাদা প্রগতিশীল চিন্তার কারনেই পৃথিবী সামনের দিকে এগিয়ে চলে।সেই চিন্তার সাথে সাথে খুবই কম মানুষ শামিল হতে পারেন। যখনই ভালো চিন্তার সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শামিল হয়,তখনই সামাজিক বিপ্লব ঘটে। ইউরোপীয় রেনেসা শুরুর আগে মানুষ যেখানে সেখানে বই পড়তে শুরু করেছিলেন।

আমাদের শিল্পমাধ্যমেও এই মুহুর্তে দারুণ কিছু মঞ্চনাটক মঞ্চায়িত হচ্ছে। তেমনি কিছু মঞ্চনাটকের মধ্যে হৃদী হক’র ‘আকাছে ফুইটেছে ফুল’, পান্থ শাহরিয়ার’র ‘ধলেশ্বরী অপেরা’ মাসুম রেজা’র ‘জলবাসর’, মুক্তনীল’র ‘হিমুর কল্পিত ডায়েরি’, এই ধরনের কাজ আমার গল্পটা (ফানুস) বলবার জন্য সাহস যুগিয়েছে।

‘ফানুস’ গল্পটা সমসাময়ীক সমস্যা ও বাস্তবতার ফিউশান উপস্থাপন।
‘‘মানুষ মানুষকে ক্ষমা করে, মালিক (অদৃশ্য ঈশ্বর/ভগবান/আল্লাহ্) মানুষকে ক্ষমা করে, প্রকৃতি মানুষকে ক্ষমা করে না।’’

ছবি: সংগৃহীত

‘ফানুস’, ‘‘যে আগুনে আত্মহারা আনন্দে ফুলেফেঁপে দূর আকাশে পুড়ে হয় ছাই,
মানুষ তার জ্ঞানত/অজ্ঞানত ভূলের বেড়াজালে আবদ্ধ রয়।’’

এই বক্তব্য কে উপজিব্য করেই নতুন নয় বরং সম্ভাব্য সুন্দর সমাধান খুঁজতে গিয়ে, ‘‘জনগণ’ই যে মূল হাতিয়ার সমাজ সংস্কার এর জন্য’’- সে কথাই বলতে চেষ্টা করেছি “ফানুস” গল্পের মাধ্যমে।

মঞ্চ-নাটকের প্রায়োগিক ভাষা কৌশল, উপস্থাপন সবকিছুই আধুনিক মানুষের কাছাকাছি যাবার জন্য যথেষ্ট নয়।কিন্তু আমার চিন্তার দৃশ্যমান উপস্থাপন’র জন্য মঞ্চ’ই উত্তম।তাই আমরা ‘‘ফ্রাইডে থিয়েটার’’ চেষ্টা করেছি,‘‘ফানুস’’ গল্পটি মঞ্চায়ন এর ক্ষেত্রে আধুনিক সরঞ্জাম’র বাঙলা,হিন্দি,ইংরেজি নাচ-গান,প্রজেক্টর সবকিছুর সর্বাধিক ব্যবহার এর মাধ্যমে বানিজ্যিক উপস্থাপন করবার।

ছবি: সংগৃহীত

সেজন্য আমরা ভাষাগত দিকেও “ফানুস” গল্পটিকে বলছি,লিখছি মঞ্চ-সিনেমা। আমরা সল্প সময়ে সর্বাধিক মানুষের কাছাকাছি যেতে চাই সহজ ভাবে। “ফানুস” নাচগানে ভরপুর বানিজ্যিক ধারার গল্প। “ফানুস” গল্প মঞ্চে প্রদর্শন হলেও, অনুভবে বানিজ্যিক সিনেমা।
আমাদের উদ্দেশ্য–মানুষের চিন্তাকে নাড়া দিয়েই ক্ষান্ত হবার নয়, আমরা সর্বাধিক মানষিক পরিবর্তন চাই।

‘‘মানুষ ধরো,মানুষ ভোজো…শোন বলিরে পাগল মন’’…লালন’র ভাষায়, আমরা ‘ফ্রাইডে থিয়েটার’ আমাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে চিন্তার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম’র লক্ষ্যে “ফানুস” গল্পের মাধ্যমে চেষ্টা করছি মানুষ ভোজবার।
‘ফানুস’ লোভ লালসা উর্ধ্বে রেখে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য,স্বপ্নবাজি এক মানবিক গল্প।

ছবি: সংগৃহীত

মঞ্চ-সিনেমাঃ ফানুস
অভিনয়: চৈতী চক্রবর্তী (কেন্দ্রীয় চরিত্র), তারেক, পাইলট, সাকিব, আলিনূর, আপন, শাওন, কাউছার, সোহান, সাগর, রাহাত, জাহিদ, সাগর রেইন, ইতিশা, জীবন, আহমেদ জীবন, এলিন, রাজু সহ আরও অনেকে।
রচনা,সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনাঃ
সঙ্গীতঃঃ শান স্বপন
পোশাকঃ ফারজানা এনি
আলোঃ তানজিল
রূপসজ্জাঃ তন্ময়
প্রজেকশনঃ মোহাম্মদ সাগর
প্রকাশনাঃ বিজয় খান হাসু
মঞ্চ-ব্যবস্থাপনাঃ সজীব
রচনা, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: নিকুল কুমার মন্ডল
প্রযোজনাঃ ফ্রাইডে থিয়েটার

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর