ভিডিও ছেড়ে দিব, আমরা যখন ডাকব তখন আসতে হবে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আশুরিঘাট এলাকায় ১৮ বছরের এক গৃহকর্মী কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হন। ঘটনার পর কিশোরীকে গণধর্ষণের পর কিশোরীকে হুমকি দিয়ে ধর্ষকেরা বলেছে, ‘ধর্ষণের কথা প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দিবো, আমরা যখন ফোন দিবো তখন আসতে হবে’।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কিশোরীর পূর্ব পরিচিত শুকুর আলী (৩৭) নামের এক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কিশোরী। শুকুর আলী কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গৌরী শংকরপুর এলাকার মৃত আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) ও ধর্ষিতার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী সিলেটের একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।কিশোরীর মা, এক বোন ও এক ভাইকে নিয়ে কুলাউড়ায় বাসা ভাড়া দিয়ে থাকেন।

মেয়েটির পরিবারের দাবি, পহেলা বৈশাখের আগের দিন শনিবার সিলেট থেকে ওই কিশোরী কুলাউড়ায় আসেন। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় সে নিজের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এ সময় কিশোরীর পূর্ব পরিচিত শুক্কুর আলী নামের এক ব্যক্তি তাকে পৌর শহরের প্রধান সড়ক থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় জোরপূর্বক তুলে কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়কের আশুরীঘাট এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে থাকা আরও ৬জনসহ শুকুর আলী কিশোরীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি মোবাইলে ধারণ করে।

ধর্ষণের পর ধর্ষকেরা হুমকি দিয়ে বলে, ‘ধর্ষণের কথা কারো কাছে প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি ছেড়ে দেবো। আর আমরা যখনই ফোন দেবো তখন আসতে হবে।’ এ সময় ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধর্ষকেরা শুকুর আলীর কাছে টাকা দিয়ে কিশোরীটিকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় পৌঁছে দিতে বলে। পরে শুকুর আলী কিশোরীকে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসার সামনে এনে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত চলে যায়। ঘরে ঢুকে মেয়েটি মাকে ধর্ষণের কথা জানান।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষিতার মা কুলাউড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে প্রোগ্রাম অফিসার আমান উল্লাকে বিষয়টি অবগত করেন।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে প্রোগ্রাম অফিসার আমানউল্লা বলেন, ‘ধর্ষণের আলামত পেয়েছি। ওই কিশোরীকে পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শর্য্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’

কুলাউড়া থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় হাসান (২৪) নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। হাসান উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গৌরীশংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় কুলাউড়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর