ইসির নিয়মে বন্দি আ’লীগ নেতারা, কর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারণায় নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের মাঠে নামতে পারছেন না আওয়ামী লীগের বড় নেতারা। যার কারণে এমপি-মন্ত্রী নন, এমন নেতাদের মাঠে নেমে ঘরে ঘরে প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ রবিবার আবুধাবিতে যাওয়ার সময় দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে এ নির্দেশ দেন তিনি।

ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলটির মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম আতিকের পক্ষে এখন সর্বস্তরের নেতা-কর্মীকে মাঠে নামানো হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ শতভাগ মেনে চলছি। এমপি-মন্ত্রীদের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কোনো কাজে জড়াচ্ছি না। এ সময় তিনি নৌকা মার্কায় ভোট চান। নানা প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে উত্তরের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম সোমবার সকাল থেকে রামপুরা, খিলগাঁও, বাড্ডায় গণসংযোগ করেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট চান।

দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমানের নেতৃত্বে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রমনা, সিদ্ধেশ্বরী, শাহজাহানপুর, শান্তিনগরে নৌকার পক্ষে গণসংযোগ করেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ অন্যরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরুর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। সবুজবাগ ও খিলগাঁওয়ে সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিলের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগের নেত্রীরা নৌকা মার্কায় ভোট চান। এ ছাড়া যুবলীগের সাবেক নেতারা ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী তাপসের পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ করেন।

৯০ দিনের মধ্যে নাগরিকদের সব মৌলিক সুবিধা : নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার পাঁচ পরিকল্পনা নিয়ে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল তিনি বলেন, জনগণের ব্যাপক সাড়ায় নবযাত্রার সূচনা হয়েছে। মেয়র নির্বাচিত হলে ৯০ দিনের মধ্যে নাগরিকদের সব মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, ‘ঢাকাবাসী সাদরে আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন। আমরা আশা করি, ৩০ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ঢাকাবাসী আমাকে তাঁদের সেবক হিসেবে নির্বাচিত করবেন। ’ ভঙ্গুর ঢাকাকে বাঁচাতে তাঁর পাঁচ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। পাঁচ পরিকল্পনায় আছে- ঢাকার ঐতিহ্য, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এসব বাস্তবায়ন করতে চান তিনি।

মিথ্যাচার করে বিভ্রান্ত করা যাবে না : প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। গতকাল খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডায় গণসংযোগ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীকে হত্যার হুমকি : ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম আশরাফ তালুকদারকে হত্যার হুমকি ও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গতকাল বিকালে শাহজাহানপুর থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার।

গোলাম আশরাফ তালুকদার অভিযোগ করেন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে আমি নিজের ও দলীয় মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের প্রচারণা চালিয়ে আসছি। কিন্তু আমার প্রচারকাজে নানাভাবে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। রবিবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় কয়েকজন আমার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মারধর করে। পরে দীপন আলী খান নামে এক সন্ত্রাসী আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হুমকি দেয়। অন্যথায় আমার কপালে খারাপ কিছু আছে বলে হুমকি দেয়। তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দীপনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বার্তা বাজার / ডব্লিও.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর