কোটিপতি হওয়ার জন্য নয়, মানবসেবার জন্য ডাক্তারি পড়ছি

‘মানবসেবার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। শুধুমাত্র সুচিকিৎসার অভাবে অনেক বাবা-মা তাদের আদরের সন্তান হারায়, কত মানুষ রাস্তায় কাতরাচ্ছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। একজন চিকিৎসক স্ব-শরীরে যেভাবে মানব সেবা করতে পারে, অন্যান্য পেশার মানুষের পক্ষে তা কখনোই সম্ভব নয়। ছোট থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল মানুষের জন্য কিছু করব। এ কারণেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। কোটিপতি হওয়ার জন্য নয়। সবার দোয়া চাই আমি যেন আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।’

কথাগুলো বলছিলেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমস্থান অর্জন করা ইতালি প্রবাসী জাকিয়া জাহান ফরাজী। প্রবাসী কন্যার ইচ্ছে ডাক্তার হয়ে দেশে প্রবাসীদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। পাশাপাশি তাদের পরিবারের জন্য সাধ্যমতো সহযোগিতা করবে বলে তিনি মনে করেন।

একটি রাষ্ট্রের নাগরিকদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা হলো অন্যতম। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যই মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এজন্য মানুষ ডাক্তার ও হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ হাসপাতালগুলো আজ সাধারণ মানুষের জন্য কসাইখানা ও মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। আর ডাক্তারদের মধ্যে বড় একটি অংশ আজ মানবসেবা ও মানবিকতা ভুলে গিয়ে কসাই ও ডাকাতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা ইতালি প্রবাসী জাহাঙ্গীর ফরাজী বলেন, ‘আজকাল ব্যাঙয়ের ছাতার মতো হাসপাতাল হচ্ছে। মেডিকেল সাইন্স না পড়ে আমাদের দেশে হাজারও ডাক্তার রয়েছে। তারা হরহামেশাই ভুলভাল চিকিৎসা দিয়ে চলেছে’।

তিনি বলেন, ‘অনেকে ডাক্তার সেজে চেম্বার দিয়ে বসে আছেন। মানুষ সুস্থতার জন্য চিকিৎসা নিতে গিয়ে ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায় আরও মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। মানুষ ধুকে ধুকে মারা যাবে বা মায়ের কোলে কোনো শিশু রোগে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে সেটা আমি মানতে পারিনি। যে কারণে আমি নিজে ডাক্তার হতে না পারলেও মেয়েকে চিকিৎসক করে আমার স্বপ্ন পূরণ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসে থাকলেও দেশের মানুষের সেবা করাই ছিল আমার ইচ্ছা। এ কারণেই আমার মেয়েকে বাংলাদেশি পড়িয়েছি। চিকিৎসা সেবায় নিজের মেয়েকে নিয়োজিত করতে পেরে আমি গর্বিত। মেয়ের সফলতার পেছনে আমার সহধর্মিণী কলি চৌধুরী সবসময় শ্রম দিয়েছেন।

জাকিয়ার জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন ফরাজী হাসপাতালের চেয়ারম্যান তার চাচা ডা. আনোয়ার ফরাজীসহ পরিবার পরিজনেরা।

জাহাঙ্গীর ফরাজীর দেশের বাড়ি শরীয়তপুর। পেশায় ব্যবসায়ী ও সিআইপিপ্রাপ্ত। পাশাপাশি তিনি ইতালির ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান। নেক মানির পরিচালকও। জাকিয়ার মা হেলেনা আক্তার কলি চৌধুরী গৃহিণী। এই দম্পতির বড় মেয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রবাসী সন্তানদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে সাফল্য বয়ে আনে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর