বাণিজ্য মেলায় ৬ প্রতিষ্ঠানকে ২২ হাজার টাকা জরিমানা

মিথ্যা বিজ্ঞাপন, অতিরিক্ত মূল্য আদায়, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি ও ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ছয় প্রতিষ্ঠানকে ২২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের অস্থায়ী কার্যালয় এসব জরিমানা করে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) অধিদফতরের সহকারী পরিচালক প্রণব কুমার প্রামাণিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মেলা শুরুর পর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতার পাশাপাশি সক্রিয় কার্যক্রম চালাচ্ছে অধিদফতর। এরই ধারাবাহিকতায় মেলায় প্রতিদিন অভিযান চলছে। যারা ভোক্তা আইন অমান্য করে অনৈতিকভাবে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কোনো ভোক্তা সরাসরি মেলায় লিখিত অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক তা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে।

অধিদফতর সূত্র জানায়, মেলা শুরু থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ছয় প্রতিষ্ঠানকে ২২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে অভিযান করে পাঁচটিকে এবং লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটিকে জরিমানা করা হয়। মেলা শুরুর প্রথম সাত দিনে পাঁচ অভিযোগ জমা পড়ে।

এর ওপর ভিত্তি করে তদন্ত ও শুনানি করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এসএস ট্রেডিং কর্পোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। একটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। বাকি তিনটি ক্রেতা-বিক্রেতার ভুল বোঝাবুঝিতে হওয়ায় আপস ও সমঝোতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

মেলায় ক্রেতা-দশনার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক প্রণব কুমার বলেন, মেলায় শুরুতে অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন যথাযথ পরিপালনের পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক করছি। তারা সংশোধন না হলে পরে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো বিক্রেতা প্রতারিত করলে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে পারবেন ক্রেতারা। অভিযোগ তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি করা হবে। প্রমাণ সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। একই সঙ্গে জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে প্রদান করা হবে।

বরাবরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শুরু হয় ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মাসব্যাপী এ বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। টিকিটের দাম এ বছর প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা।

এবারের মেলায় মোট স্টল/প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১২৮টি এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টলের সংখ্যা ২৪৩টি। এর মধ্যে বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়ার স্টলের সংখ্যা ১৭টি।

এবারের মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি ও তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

মেলায় ক্রেতারা যেসব পণ্য কিনতে পারবেন তার মধ্যে অন্যতম দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, পাট ও পাটজাত পণ্য সামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়া জাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক সামগ্রী, মেলামাইন সামগ্রী, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ঘড়ি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ইমিটেশন জুয়েলারি, সিরামিকস, টেবলওয়্যার, ক্যাবল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, আসবাবপত্র ও হস্তশিল্পজাত পণ্য, উপহার সামগ্রী, কনস্ট্রাকশন সামগ্রী, হোম ডেকর, বেকারি পণ্য, বিদেশি বস্ত্র ইত্যাদি।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর