জাবি’র ডেপুটি রেজিষ্টারের ভবনে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ডেপুটি রেজিষ্টার মোঃ আলী আকবর খান দিপুর নির্মানাধীন দ্বিতল ভবনের এক তলায় চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী (১০) ধর্ষিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানাধীন জাবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশ এসে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ‘ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার’ (ওসিসি) এ প্রেরণ করে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আমবাগান এলাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ডেপুটি রেজিষ্টার মোঃ আলী আকবর খান দিপুর নির্মানাধীন দ্বিতল ভবনের ২য় তলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র ভাড়া নিয়ে থাকে। গত শনিবার সে দাদীর সাথে বাবা-মা এর বাসায় আসে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) মাগরিবের নামাজের কিছু সময় পর তার মেয়েকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি কোলে করে তার বাসায় দরজার কাছে রেখে পালিয়ে যায়। এসময় বাসায় কেউ ছিলো না। তখন মেয়ের চিতকার ও কান্না শুনে অন্য প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মুখে মাফলার পরিহিত ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পরে মেয়ে জানায়, অচেনা এক ব্যক্তি তাকে জুস খাবার কথা বলে পাশের দিপু সাহেবের বাসার ভিতরে নিয়ে গিয়ে জোর করে তার শ্লীলতাহানি ঘটায়। পরে কাউকে এসব বললে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে কোলে করে তার বাসার সামনে রেখে যায়।

এব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক রাকিবুল হাসান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওই ডেপুটি রেজিস্ট্রার এর ভবনের একতলায় ধর্ষণের আলামত হিসেবে বেশ কিছু জিনিস জব্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ঢাকা মেডিক্যাল এর ওসিসি তে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যে ভবনে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার দ্বিতীয় তলায় জাবি’র কয়েকজন ছাত্র ভাড়া থাকে। প্রাথমিকভাবে তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আশুলিয়া থানায় বিষয়টি নিয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লেহাজ উদ্দিন এর বাড়ির সাথেই এই ঘটনাস্থল। এই প্রতিবেদকের নিকট তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে দ্রুত জাবি মেডিক্যাল সেন্টারে পাঠাই। তবে মেয়ের বক্তব্য শুনে ধারণা করা হচ্ছে, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ আলী আকবর খান দিপুর ওই নির্মাণাধীন ভবনের কেয়ারটেকার এই জঘন্য কাজটি করতে পারে। কারণ উপরের ছাত্ররা ছাড়া এই বাড়ির মেইন গেটের চাবি কেয়ারটেকারের কাছেই থাকে।

তবে পুলিশের উপস্থিতিতে বাড়ীর মালিক মোঃ আলী আকবর খান দিপু জানান, তার বাড়ীর কোনো কেয়ারটেকার নেই, ভাড়াটিয়া ছাত্রদের কাছে এবং তার নিজের কাছেই বাড়ির মূল গেটের চাবি থাকে। আর মূল গেট সবসময় বন্ধ থাকে।

বিষয়টি রহস্যময় হয়ে ওঠে ধর্ষক পালিয়ে যাওয়ায় এবং তাকে কেউ চিনতে না পারায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতিতে গণমাধ্যমকর্মীরা ওই ভবনে প্রবেশ করে নিচতলায় একটি নির্মাণাধীন টয়লেটের ভিতর থেকে একটি ন্যাকড়ার নিচে দুইটি ব্যবহৃত কন্ডম, দুইটি দশ টাকা দামের লিচুর জুস এবং দুই টুকরা ব্যবহৃত টিস্যু দেখতে পান। পরে পুলিশ ওগুলি ধর্ষণের আলামত হিসেবে জব্দ করে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রউফ শৈবাল এর মুঠোফোনে কল করে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম একটি ঘটনার ব্যাপারে জেনেছি, তবে আমাদের প্রক্টর স্যার বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারবেন। পরে জাবি প্রক্টর এর মুঠোফোনে তাকে পাওয়া না যাওয়ায় এব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।

বার্তা বাজার / ডব্লিও.এস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর