রং তুলিতে ইবির বর্ষবরণ প্রস্তুতি।

কেউ রং তুলি নিয়ে মেঝেতে আল্পনা আকঁছেন কেউ বানাচ্ছেন রংবেরং এর মুখোশ,কেউ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি,কেউবা আবার গ্রামীণ ঐতিহ্যের ধারক পালকি বানাচ্ছেন আবার কেউ তাতে আলতো করে রং এর ছোঁয়া দিয়ে জীবন্ত করে তুলছে।দিনে-রাতে চলছে বিরামহীন রংয়ের খেলা।কাজের ফাঁকে ফাঁকে আড্ডা গল্প গান আর খুনসুটি তো চলছেই।এদের সবার লক্ষ্য কিন্তু একটাই বৈশাখ।বাঙ্গালির প্রানের উৎসব বর্ষবরন বর্ণিল ভাবে উদযাপন।

শুক্রবার সকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ আর অনুষদে সরেজমিনে ঘুরে এমনটাই দেখা যায়।বাঙালির হৃদয় স্পন্দন পহেলা বৈশাখ উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতি বছরই ইবি ক্যাম্পাসে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।তাই বর্ষবরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীরা দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বর্ষবরণের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে।শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত রংয়ের আঁচড় দিতে কার্পণ্য করছে না তারা। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকছে পেঁচা ও বাঘসহ নানা ধরণের মুখোশ।সেই সঙ্গে চির চেনা গ্রামীণ ঐতিহ্য গ্রাম-বাংলার মানুষের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে কৃষক,কামার,কুমার,মোড়ল,বর-বউ,জেলে রূপে সাজ শোভাযাত্রাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করার চেষ্টা তো থাকছেই।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন সংলগ্ন আম বাগান প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলা চলাকালে বাংলা মঞ্চে সঙ্গীত,নৃত্য ও নাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য রিহার্সাল চলছে দিনরাত। ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখা যায়,এরই মধ্যে বিভিন্ন বিভাগ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের জন্য স্ব-স্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ব্যানার,কার্টুন-ফেস্টুন তৈরি ও আল্পনা আঁকার পাশাপাশি নিজ বিভাগের জন্য মেলায় বরাদ্দকৃত স্টল সাজাতেও কার্পণ্য বোধ করছেন না।এরমধ্যে বাংলা বিভাগ,মার্কেটিং বিভাগ,আইন বিভাগ,ফিন্যান্স বিভাগ,ফলিত রসায়ন,ফার্মেসি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ বর্ষবরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জোরেশোরে।পিছিয়ে নেই সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও।

বর্ষবরণ নিয়ে ফলিত রাসায়ন বিভাগের সাদিয়া ইসলাম বলেন,পহেলা বৈশাখে বাঙালি জাতির ঐতিহ্যে মিশে আছে ।এবার বছরের প্রথম দিনটি ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধব ও সহপাঠীদের সঙ্গে উদযাপন করব।উল্লাসে মেতে উঠতে মুখিয়ে আছি।’ ল্যান্ড ল বিভাগের সোহান সিদ্দিকি বলেন,বর্ষবরণের উৎসব দেশের সব শ্রেণী-পেশা,ধর্মের মানুষকে একত্রিত করে।এবারই প্রথম ক্যাম্পাসে দিনটি পালন করবো,দিনটির জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। লোক প্রশাসন বিভাগের তাসনিমুল হাসান বলেন,বৈশাখ বাঙ্গালীর হৃদয়ে প্রাণের সঞ্চার ঘটায়।ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরন উপলক্ষে মেলার আয়োজন করা হয় যা প্রতিবছরই বাড়তি মাত্রা যোগ করে।হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এনামুল হক বলেন,বৈশাখ মানেই আনন্দ উল্লাস অতীতের গ্লানি ও হতাশাকে ভুলে নতুন ভবিষ্যৎ কে সামনে রেখে জীবন সংগ্রামে এগিয়ে যাওয়া।নতুন বছর সকলের ভালো কাটুক এমনটাই প্রত্যাশা।

সবমিলয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ বরণ করে নিতে প্রস্তুত প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর তীর্থ ভূমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।সকল অশুভ আর কালো শক্তিকে পাশ কাটিয়ে ১৭৫ একরের এই পূণ্যভূমি বাঙালি জীবনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ পহেলা বৈশাখে মেতে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সকলের।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর