সিরাজগঞ্জে স্বাক্ষর জাল করে জমি দখল-আদালতে মামলা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রখ্যাত লেখক প্রমথ চৌধুরী ও কলিকাতা হাইকোটের বিচারপতি আশুতোষ চৌধুরীর স্বাক্ষর জাল করে ৩০ দশমিক ৭৯ একর জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকারের পক্ষে উল্লাপাড়ার বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আবুল হোসেন উল্লাপাড়া থানা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। গত ৪ এপ্রিল ১৯ইং তারিখে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তরা হলো- উপজেলার খাদুলী গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের চার ছেলে সৈয়দ আলী, শহিদুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন ও নবীর উদ্দিনসহ মোট ১৮জন।

উল্লাপাড়া আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নজরুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ইন্সভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) কে আগামী ১৪ই মে তারিখে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা যায়। মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রমথ চৌধুরী যশোর জেলায় জন্ম গ্রহন করলেও তার পৈতিক নিবাস ছিল পাবনার চাটমোহর থানার হরিপুর গ্রামে। সে সময় সিরাজগঞ্জ জেলা পাবনার একটি মহকুমা শহর থাকায় প্রমথ চৌধুরী, তার ভাই আশুতোষ চৌধুরী ও ভাতিজা কল্যাণ কুমার চৌধুরীসহ তার স্বজনরা খাদুলী গ্রামে বহু সম্পত্তি ক্রয় করেছিলেন।

প্রমথ চৌধুরী, আশুতোষ চৌধুরী ও তার স্বজনেরা ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পরেই জমিজমা রেখে ভারতে চলে যান। সেখানেই প্রমথ চৌধুরী ১৯৪৬ এবং কলিকাতা হাইকোটের বিচারক স্যার আশুতোষ চৌধুরী ১৯৩৪ সালে মৃত্যুবরন করেন। কিন্তু সাইফুল ইসলাম ওরফে সয়ফল ও তার বাবা আবেদ আলী ও সাইফুলের ছেলে সৈয়দ আলী গং উপমহাদেশের প্রখ্যাত লেখক প্রমথ চৌধুরী ও স্যার আশুতোষ চৌধুরীর মৃতের প্রায় ৪০ বছর পর ১৯৭৮ সালের ১৪ নভেম্বরের তার স্বাক্ষর জাল করে সোলেনামা (৩৩/৭৭) ও জাল ডিগ্রি (৩৪৬/৮৩) তৈরী করে ৩০ দশমিক ৬৫ একর জমি দখল করেন।

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে মামলা ও অভিযোগ ওঠায় জাল ডিগ্রীর কাগজগুলো সরকারী নথিপত্রের সাথে মিল পাওয়া যায়নি বলে জানা যায়। নথিপত্র মতে, জাল ডিগ্রীটির (৩৪৬/৮৩) বাদী মুলত খবির উদ্দিন এবং বিবাদী মৃত ফনিন্দ্র নাথ হালদার এবং তফশিলর সম্পত্তি আলাদা। জলিয়াতকারীরা ডিগ্রীতে নামগুলো পরিবর্তন করে তাদের নিজ নাম ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও বিবাদীগন জাল ও ট্যাম্পারিং করে স্থানীয় তহশিল অফিসে ১৫৪৫/৮৩- ৮৪ ডিসিআর তিন দাগের ৯৩ শতক জমি টেম্পার করে সেস্থানে আরো তিনটি দাগ বসিয়ে ৭ দশমিক ৮৪ একর সম্পত্তি জাল ডিসিআর তৈরী করে। মামলার বাদী আবুল হোসেন জানান, ট্যাম্পারিং করে ভুয়াসীল মোহর ব্যবহার, মামলার রায় নকল ও জালসহ বিজ্ঞ আদালত সমূহের জাল সীলমোহর ব্যবহার করেছেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর