দেশের সর্বনিম্ম তাপমাত্রা দিনাজপুরে

দিনাজপুরে তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না শীতের তীব্রতা। উপায় না পেয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন নিম্ম আয়ের মানুষ। কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশার প্রভাব পড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধদের উপর।

শনিবার দেশের সর্বনিম্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে। দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শনিবার সারা দেশের মধ্যে দিনাজপুরে ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশের সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ছিল।

তীব্র শীতে যেমন দুর্দশা বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের তেমনি বেড়েছে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। কনকনে হিমেল হাওয়া ও মেঘলা আকাশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘন কুয়াশা। দুর্ঘটনা এড়াতে মহাসড়ক ও সড়কে যান্ত্রিক যানবাহনগুলো হলুদ বাতি জ্বালিয়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করছে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে গ্রাম ও শহরের রাস্তাঘাট।

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শহরের রাস্তায় মানুষের চলাফেরা কমে যাচ্ছে। শীতে হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর ভিড় কমে গেলেও ওয়ার্ড গুলোতে বেড়েছে সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জেলায় ১ লাখ ২০ হাজার কম্বল বরাদ্দ দিয়েছে। এসব কম্বল জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ও পৌরসভার ওয়ার্ড পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করছেন।

দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘শনিবার দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ম ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এরকম তাপমাত্রা আরো কয়েকদিন বিরাজ করবে। মৃদু শৈত্য প্রবাহ বা মাঝারি ধরণের শৈত্য প্রবাহ দিনাজপুরের বৈছে বলে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। তবে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’

দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘গত নভেম্বর মাস থেকে শীতজনতি রোগে সদর এবং উপজেলা পর্যায়ে রোগী ভর্তি হয়েছে। তীব্র শীতে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা দানের ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি বিশেষ করে বৃদ্ধ এবং শিশুদের খুব প্রয়োজন না হলে বাইরে বের হতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে বেশি বেশি পানি খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম জানান, শীতের শুরু থেকেই আমরা উপজেলা পর্যায়ে কম্বল বিতরণ করে আসছি। এ পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি মিলে ১ লাখ ২০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আমরা বিভিন্নভাবে আরো কম্বল সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। যাতে এই শীতে দিনাজপুরের কোন মানুষ কষ্ট না পায় সেদিকটাও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি সমাজের বিত্তশালীদের শীর্তাত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।’

বার্তা বাজার/এম.সি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর