ডাকসুর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হোক, এটা কাম্য নয়

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ডাকসুর ভিপির ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনাকে কেউ যেন পাকিস্তান আমলের এসএসএফ-এর সন্ত্রাসী ঘটনার সাথে তুলনা করার সুযোগ না পায়।

তিনি বলেন, ডাকসু কেবল ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান নয়, এটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনায় ডাকসু নেতৃত্ব দিয়েছে। ডাকসু সকল দল ও মতকে প্রতিনিধিত্ব করে।

এ সংগঠনের দু’দশকের ওপর নির্বাচন না হওয়ায় জাতীয় রাজনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতীয় নেতৃত্ব গঠন পিছিয়ে পড়েছে। মেনন শুক্রবার দুপুরে ওয়ার্কার্স পার্টি কার্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দের সাথে ডাকসু ভিপি হিসেবে সে সময়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনাকালে একথা বলেন।

ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, সহ-সভাপতি অতুলন দাস আলো, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসাম খান ফয়সাল প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, বিভিন্ন দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও ডাকসুর ভিপির নেতৃত্বেই সকল ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে সভা করতেন, সিদ্ধান্ত নিতেন।

সাবেক ডাকসু ভিপি তোফায়েল আহমদ এভাবে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানকালীন সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মুখপত্রে পরিণত হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বেই সভাসমূহ হতো সেখানে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন উভয় গ্রুপ ও এনএসএফ-এর একাংশও যুক্ত ছিলেন।

এর ব্যতিক্রম প্রথমে ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কুখ্যাত গভর্নর মোনেম খানের আসাকে কেন্দ্র করে ছাত্র সমাজের বিরোধিতাকে বাধা দিতে এনএসএফ-এর গুন্ডাবাহিনীর ডাকসু অফিসে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় ছাত্র সংগঠনের সভায় আক্রমণ করেছিল।

কিন্তু ছাত্রদের প্রতিরোধে তা ব্যর্থ হয়। এছাড়া পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা দু-একবার ঘটেছে। কিন্তু ডাকসু প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবসময়ই সকল ছাত্রকে প্রতিনিধিত্ব করেছে। ডাকসুর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হোক এ ধরনের ঘটনা হতো না।

রাশেদ খান মেনন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর উপুর্যপুরী হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একেবারেই একপেশে আচরণ, মামলা-পাল্টা মামলায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, দীর্ঘ দুই দশকের ওপর সময়ের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদসমূহের যে নির্বাচন হয়েছে সেই অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে ছাত্র সমাজ সচেষ্ট থাকবেন এবং এ ধরনের ঘটনা পরিহার-প্রতিরোধ করবেন।

রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দকে ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বর্ণনায় ডাকসুর সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে এসব কথা বলেন। তিনি শীতার্ত মানুষের পাশেও ছাত্রদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর