যে কারণে ইমরুলকে রানআউট করলেন না মাশরাফি

সবার জানা, আজ (শুক্রবার) ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে ৫৩ বলে ৫৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দল জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বদলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নেতৃত্ব দেয়া ইমরুল কায়েস। কিন্তু জানেন কি? এই বাঁহাতি টপ অর্ডার শূন্য হাতেই ফিরে যেতে পারতেন। কিন্তু ফিল্ডিং অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার উদারতায় বেঁচে গিয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছিল চট্টগ্রাম ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। বোলার ছিলেন ঢাকার অফস্পিনার মেহেদি হাসান। তার বলে শর্ট কভারে ফিল্ডার সোজা ঠেলে বল ঠিক ডেড হবার আগে ক্রিজ থেকে দু পা এগিয়ে গিয়ে উইকেটের ওপরে নরম মাটি ঠিক করতে থাকেন ইমরুল। বল ডেড হয়নি। তাই ফিল্ডার মুমিনুল হক বল ধরে ডিরেক্ট থ্রো‘তে উইকেটে ভেঙে দেন।

আম্পায়ারও রানআউট দিয়ে দেন। কারণ ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, বল ডেড না হবার আগে ব্যাটসম্যান ও ননস্ট্রাইক (অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যান) ব্যাটসম্যান ক্রিজের বাইরে থাকা অবস্থায় কারো সরাসরি বা ফিল্ডারের হাত ঘুরে আসা বল উইকেট ভেঙে দিলে রানআউট।

তবে এসব ক্ষেত্রে যদি ফিল্ডিং সাইড না নেয়, তাহলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তর পরও ব্যাটসম্যান বা রানার ‘নট আউট’ বলে বিবেচিত হবেন। আজ মাশরাফি-তামিমরা সেই ক্রিকেটীয় শিষ্টাচার, নম্রতা-সৌজন্যতা এবং ভব্যতা দেখিয়ে ইমরুলকে ব্যাট করার সুযোগ করে দেন। এটা অবশ্যই ফিল্ডিং সাইডের উদারতা। তবে সেটা নিয়মের ভেতরে থেকেই।

তবে চাইলেই তো প্রতিপক্ষকে কাবু করার জন্য সুযোগটা নিতে পারতেন মাশরাফি। কেন নিলেন না? লো স্কোরিং গেমে ইনফর্ম ইমরুল কায়েস শূন্য রানে ফিরে গেলে ঢাকার জেতার সম্ভাবনা জোরদার হতো। এসব জেনে ও বুঝেও কেন মাশরাফি আর তামিমরা ইমরুলকে ব্যাটিং করার সুযোগ দিলেন? সে প্রশ্ন এখন মাশরাফি ভক্ত, ঢাকার সাপোর্টার এবং সাধাণ ক্রিকেট অনুরাগীদের মুখে মুখে।

আজ খেলা শেষে প্রেস কনফারেন্সে কথা বলতে এসে মাশরাফি তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। শেরে বাংলার কনফারেন্স হলে মাশরাফির কাছে প্রশ্ন ছিল-ইমরুল তো রানআউট ছিলেন, তাকে রানআউট করেও কেন নিলেন না? আবার ব্যাট করার সুযোগ দেয়া কেন?

মাশরাফি যখন শেরে বাংলার কনফারেন্স হলের ডায়াসে বসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন, তখন ঠিক নীচেই বসেছিলেন ইমরুল কায়েস। কারণ ব্যাখ্যা করার আগে মাশরাফি ইমরুলের দিকে হাত তুলে বলে ওঠেন, ‘টু বি অনেস্ট, একটা ফিল্ডিং দল আউটটা নিতে পারে। ইমরুল শ্যুড লার্ন দ্য ম্যানারস। ও কিন্তু ধন্যবাদও বলেনি (হাসি)।’ অবশ্য ওপাশ থেকে ইমরুল সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠেন-‘ধন্যবাদ ভাই।’

মাশরাফি পরে দুষ্টুমি রেখে কিছুটা সিরিয়াস হন। ব্যাখ্যা দেন, তিনি নিজে এবং তামিম ইকবালের মত সিনিয়র মোস্ট ক্রিকেটার ফিল্ডিং দলে থাকার পর ওমন আউট নেয়া খুব শোভন দেখায় না। তাই আউট হবার পরও ইমরুলকে ব্যাট করার সুযোগ করে দেয়া।

ঢাকার অধিনায়ক বলেন, ‘ক্রিকেটীয় নিয়মে গেলে কিন্তু থার্ড আম্পায়ার আউট দিতে পারতো। আমার মনে হয় তামিম খেলছে, আমি খেলছি। এমন একটা আউট নেব, সেটা কিন্তু ভালো দেখায় না। তাই নেইনি।’

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর