‘চা অধ্যুষিত সিলেটের নৈসর্গিক সৌন্দযের্র লীলাভূমি, চায়ের রাজধানীখ্যাত ঐতিহাসিক জনপদ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা।
স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তির উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় এলাকায় শিক্ষার আলো বিস্তারে ১৯৬৯ সালে চা বাগানঘেরা মনোরম পরিবেশে ৫ একর ভূমির ওপর গড়ে উঠেছিল ‘শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ’।
এলাকার জনগণের আশা-আকাঙ্খা ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৫ সালে ১ জুলাই কলেজটি সরকারিকরণ হয়।
জেলার এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছর উদযাপনের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব আগামী ২৮ ডিসেম্বর। ‘এসো মিলি প্রাণের মেলায়’- এ শ্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য উৎসবের শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে এখন।
এ উপলক্ষে সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণিল উৎসবে কলেজের ৫০টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। চলতি মাসের প্রথম দিনে উৎসবের প্রাকপ্রস্তুতি হিসেবে কলেজ থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সারা পাওয়া গেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সাবেক চিপ হুইপ ও সরকারি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ডা. আব্দুস শহীদ এমপি। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন ডা. মোস্তফা জামান আব্বাসী, বিশেষ অতিথি হিসেবে আব্দুর নূর তুষারের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এ ছাড়া কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী ও পিন্টু ঘোষসহ আরও। অনেক তারকারা উপস্থিত থাকবেন বলে আয়োজকরা নিশ্চিত করেছেন।
কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ২৮ ডিসেম্বর রয়েছে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান মালার আয়োজন। এতে কলেজ প্রাঙ্গণে ওই দিনের অনুষ্ঠান সূচিতে রয়েছে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে অভ্যর্থনা ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ, ৯টা ৩০ মিনিটে জাতীয় পতাকা ও উৎসব পতাকা উত্তোলন, সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত, ১০টায় প্রয়াত শিক্ষার্থীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নীরবতা পালন, ১০টা ৫ মিনিটে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, আলোচনাসভা ও গুণীজন সংবর্ধনা, দুপুর ১টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য বিরতি, ২টা ৩০ মিনিট থেকে ব্যাচভিত্তিক স্মৃতিচারণ ও ফটোসেশন, সন্ধ্যা ৫টা ৩০ মিনিটে ফানুস উড্ডয়ন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রাত ৮টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠানের সমাপনী।
এ ব্যাপারে ১৯৯৬ সালের এই কলেজের এসএসসি ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমান ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ইতিমধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করে অনুভূতি ব্যক্ত করে জানান, তিনি আশা করেন নিজ কলেজের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ২৮ ডিসেম্বর বন্ধুবান্ধবসহ পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে মিলনমেলায় পরিণত হবে।
উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক ও সদস্য সচিব বিশ্ব জ্যোতি চৌধুরী জানান, উপজেলার প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠের পঞ্চাশ বছরপূর্তি উৎসবটি এখন পর্যন্ত কলেজের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হিসেবেই বিবেচিত হবে।
সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বর্তমান শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ সার্বিকভাবে যুক্ত রয়েছে। কয়েক হাজার সাবেক শিক্ষার্থী উৎসবে মিলিত হবেন। এ জন্য সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ।
বার্তাবাজার/এমকে