দোকান বানাতে পুরাকীর্তির একাংশ ভেঙে ফেলল পুলিশ!

নীলফামারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশেই তৈরি হচ্ছে ‘পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি’র (পুনাক) একটি দোকান। সেটি নির্মাণে সম্প্রতি ইটের ঘাটতি পড়ে। সেই ঘাটতি পূরণে পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদের নিয়ে চলে যান ১৮০০ শতকের পুরাকীর্তি নীলকুঠিতে।

তাঁরা পুরাকীর্তির একটি অংশ ভেঙেও ফেলেন। এর মধ্যে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানালে টনক নড়ে পুলিশের। নীলকুঠির অবস্থান জেলা সদরের পলাশবাড়ী ইউনিয়নের নটখানা এলাকায়। উপমহাদেশে নীলচাষের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই নীলকুঠি।

নীলকুঠিয়ালদের শাসন, শোষণ ও নির্যাতনের স্মৃতি বহন করছে ইট-চুন-সুরকির ওই স্থাপনা। নির্মাণ শ্রমিক ও টুপামারি ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর রহমান (৩৪) বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন ধরে পুলিশ লাইনে পুনাকের একটি দোকান নির্মাণের কাজ করছি।

মঙ্গলবার চার শ্রমিককে নীলকুঠি ভেঙে ইট আনতে বলা হয়। সেখানে এসে কাজ শুরু করলে বাধা দেয় এলাকাবাসী। বাধার মুখে আমরা কাজ বন্ধ করে দিই।’

পলাশবাড়ী ইউনিয়নের নীলফামারী গ্রামের অনিল চন্দ্র রায় (৫৫) বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে নীলকররা নীলকুঠিতে বসে নীলচাষের কার্যক্রম চালাত। এটি টর্চার সেল হিসেবেও ব্যবহার করা হতো।’

পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজ আলী প্রামাণিক বলেন, ‘আমার জানা মতে, ব্রিটিশ আমলে নীলচাষের ওই নিদর্শনটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। সেটি হঠাৎ করে কে বা কারা ভাঙছে শুনে এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাঙার কাজ বন্ধ করাই।’

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘জমিটি ছিল জেলা পুলিশের। সেখানে মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার কথা। এ জন্য ওই স্থাপনাসহ সেখানকার জমি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের ধারণা ছিল, স্বাস্থ্য বিভাগ পুরাকীর্তিটি ভেঙে ফেলবে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘এর মধ্যে পুনাকের একটি শোরুম নির্মাণে ইটের প্রয়োজন পড়ে। সেই প্রয়োজন মেটাতে শ্রমিকরা কিছু ইট সংগ্রহ করতে সেখানে যায়। পুরাকীর্তির বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জানার পর ভাঙার কাজ বন্ধ করা হয়েছে।’

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর